মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোনার খলিলুর রহমানকে (পলাতক) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি বলেন, ২৫২ পৃষ্ঠার রায়ে খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও একটি অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি তিনি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ১৮ জুলাই শুনানি শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ আসামির বিরুদ্ধে শুনানিতে প্রসিকিউটর ছিলেন রানা দাশগুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমইএইচ তামিম। ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
পাঁচ আসামি হলেন- মো. আজিজুর রহমান, রমজান আলী, মো. খলিলুর রহমান, আশক আলী ও মো. শাহনেওয়াজ। এর মধ্যে চার আসামি রমজান আলী, আজিজুর রহমান, আশক আলী ও মো. শাহনেওয়াজ মৃত্যুবরণ করেন।
আসামিদের মধ্যে খলিলুর রহমান ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চন্ডিগড় ইউনিয়নে আল বদর বাহিনীর কমান্ডার হন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দুজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট ও সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।