শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

বিশ্বের জীবিত 'সর্বোচ্চ বয়সী নারী' কী তাহলে রুখমিনিয়া পাশী?

কামরান আহমদ, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

বিশ্বের জীবিত 'সর্বোচ্চ বয়সী নারী' কী তাহলে রুখমিনিয়া পাশী?

মৌলভীবাজারে সন্ধান মিলেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ বয়সী নারীর। টেংরা ইউনিয়নের রাজনগর চা বাগানের রাউবাড়ি এলাকায় বসবাস করেন তিনি। তার নাম রুখমিনিয়া পাশী। জাতীয় পরিচয়পত্রের হিসেবে তার বয়স এখন ১১৬ বছর ৪ মাস ২ দিন। বেঁচে আছেন এমন নারীদের মধ্যে তিনিই এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ বয়সী নারী। 

 

জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায়, রুখমিনিয়ার জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ৯ অক্টোবর ১৯০৮। স্বামীর নাম ভগবান পাশী। মায়ের নাম ধনেশ্বরী পাশী। ভোটার আইডি নম্বর ৫৮১৮০৭৩৪০৩৮৬৩। 

 

তথ্যমতে, এর আগে বিশ্বের সর্বোচ্চ বয়সী নারী ছিলেন মারিয়া ব্রানিয়াস। তিনি ২০২৪ সালের ১৯ আগস্টে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৭ বছর। ২০২৩ সালের গিনেজ রেকর্ড হিসেব অনুযায়ী মোরোরাই ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত নারী।

 

রুখমিনিয়া পাশীর বাড়িতে গিয়ে পরিচয় পত্র দেখে রুখমিনিয়ার বয়স সঠিক আছে কিনা তা জানতে চাইলে তার স্বজনরা জানান, রুখমিনিয়ার বয়স জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকঠাক আছে। তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন। রুখমিনিয়া বাংলায় কথা বলতে পারেন না। তিনি দেশওয়ালী ভাষায় কথা বলেন।

 

প্রাইমারী শিক্ষক উমেশ যাদবের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ভোটার হালনাগাদ করার সময় উনার নাম লিস্টে দেখতে পাই। সেখানে তার বয়স দেখে আমি চমকে উঠি! বাড়িতে গিয়ে আমার পরিচয় দিলে তিনি আমাকে চিনতেও পারেন। 

 

রুখমিনিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তিনি রোদে বসে নিজ হাতে ভাত খাচ্ছিলেন। উনার সাথে কথা বলতে চাইলে কানে কম শুনায় উনার নাম জিজ্ঞেস করা ছাড়া আর কিছুই কথা বলা যায়নি। 

 

জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে রুখমিনিয়া পাশীর পূর্ব পুরুষ ভারতের উত্তর প্রদেশের বিহার থেকে মৌলভীবাজার সদর ইউনিয়নের গিয়াসনগর চা বাগানে আসেন। তারা সেখানে চা শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। রুখমিনিয়ার বাবা হরিদেও সেখানেই থাকতেন। রাজনগর উপজেলার একটি চা বাগানের শ্রমিক ভগবান দাস পাশীর সঙ্গে রুখমিনিয়ার বিয়ে হয়। এরপর তারা রাজনগর চা বাগানের রাউবাড়ি এলাকায় বসবাস করতে শুরু করেন।

 

রুখমিনিয়ার প্রতিবেশী ৭০ বয়সী নারী শ্রীপাতি পাশি বলেন, “ব্রিটিশ আমলে রুখমিনিয়ার বিয়ে হয়েছে। শারীরিক গঠন বেশ ভালো থাকায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে।”

 

টেংরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাম দুলারী নুনিয়া বলেন, “রুখমিনিয়াকে দেখতে অনেক বয়স্ক মনে হয়। এলাকার সবাই তাকে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক হিসেবেই জানেন। আমরা উপজেলার প্রশাসনের সহযোগিতায় উনার সঠিক বয়স বের করার চেষ্টা করবো। ”

 

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা আজকের বাংলাকে বলেন, আমরা এবিষয়ে অবগত আছি। এটা নিয়ে আমরা শীঘ্রই কাজ শুরু করবো। উনার এনআইডি যাচাই করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে উনার সঠিক বয়স নির্ধারণ করা হবে।