জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
জামালপুর সদর উপজেলার ১নং কেন্দুয়া ইউনিয়নের গোপালপুর দামেশ্বর এলাকার মৃত ইব্রাহিম আলীর ৭০ শতাংশ জমি দীর্ঘ ১৭ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে উদ্ধার করেছে তার পরিবার। গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধারকৃত জমির ওয়ারিশগন জমিতে লাল নিশান টাঙ্গিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন এবং ওই ভূমিতে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
#জানা যায়# মৃত ইব্রাহিম আলীর পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া ৩৪৬ ও ৩৪৯ দাগে ৭০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক বেদখল করে রেখেছিলেন কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজা ও তার স্বজনরা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক জমি বেদখল করেছিলেন তারা। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর তারা গাঁ ঢাকা দেওয়ায় ভুক্তভোগীরা জমিতে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত ইব্রাহিম আলীর চার ছেলে তিন মেয়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। বিভিন্ন সময় সালিস-বৈঠক হলেও কোন সমাধান আসেনি। এনিয়ে আবারও এলাকাবাসী ও মাতাব্বররা বসে সমাধানের কথা বলেছেন।
#ভুক্তভোগী # মৃত ইব্রাহিম আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফা জানান, "দীর্ঘদিন পর আমাদের জমিতে আমরা আসতে পেরেছি। কিন্তু তারপরও প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা ও তার স্বজনরা এখনও আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।"
ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন বিমলা জানান "কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজার নেতৃত্বে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে আমাদের মারপিট করে জমি জোরপূর্বক বেদখল করে নেয়। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের জমিতে আমরা আসতে পেরেছি। এখন আমাদের জমিতে আমরা চাষাবাদ করছি।" তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, "বিগতদিনে আমাদের জমি ফিরে পেতে চাইলে তারা আমাদের উপর অমানুষিকভাবে নির্যাতন চালাতো। আমরা কোন কথা বলতে গেলে আমাদের উপর হামলা করতো ও মামলার ভয় দেখাতো। আজ আমাদের জমি আমরা ফিরে পেয়েছি।"
#এদিকে# উক্ত জমি তারা উদ্ধার করলেও এনিয়ে এলাকাবাসী সালিস বৈঠকের মাধ্যমে জমির বিরোধ মীমাংসা করার কথা জানিয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা বলেন, "জমি কাগজপত্র দেখে তারা বুঝে নিবে। যদি জমির কাগজপত্র আমার থাকে তাহলে আমি পাবো, আর তাদের থাকলে তারা পাবে।" তিনি আরও বলেন, "এই জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এলাকাবাসী ও মাতাব্বররা মীমাংসার জন্য বসেছিলেন। আবার সামনের তারিখে উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে বসার কথা রয়েছে।"
#জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা# (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, "কেন্দুয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে কোন ধরনের আমাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।"