মোঃ মাসুদ বিপ্লব , ঠাকুরগাঁও প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:১২ পিএম
ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট ১০৫টি ইটভাটার মধ্যে মাত্র ৬টি ভাটার বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৯৯টি ইটভাটা কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই চলছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। ইটভাটার অবৈধ কার্যক্রমের ফলে একদিকে আবাদি জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। টপ সয়েল কাটার ফলে কৃষি উৎপাদনে ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, ভাটাগুলোতে অবাধে কাঠ ও খড়ি ব্যবহার করায় জেলায় বৃক্ষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের বাতাস মারাত্মক দূষিত হয়ে উঠেছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সমস্যা, এলার্জিসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষত শিশু ও বৃদ্ধরা এ পরিস্থিতিতে বেশি ভুক্তভোগী।
জনমনে গুঞ্জন রয়েছে, অবৈধ ইটভাটাগুলো যেন নির্বিঘ্নে চলতে পারে, সে জন্য একটি প্রভাবশালী মহল নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে থাকে। এর ফলে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করছে।
প্রশাসনের তরফ থেকে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও তা শুধুমাত্র নামমাত্র। ফলে অবৈধ ইটভাটাগুলো নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিত্ব কলেজ পাড়া নিবাসী আ ন ম নাজমুল হাসান ( সম্পাদক ও প্রকাশক সাপ্তাহিক জনরব) জানান, অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তাছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের বায়ু দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।যার প্রভাব আমাদের জীববৈচিত্র্যের উপর পড়ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ জনগণ দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানাচ্ছে। তাদের মতে, অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ না করলে জেলার পরিবেশ ও কৃষি ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পড়বে। পাশাপাশি প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাও জরুরি।
যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ঠাকুরগাঁও জেলার পরিবেশ, কৃষি ও জনস্বাস্থ্য আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা অব্যাহত থাকলে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
পরিবেশ রক্ষা ও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে।