তাহেরুল ইসলাম তামিম, রাণীশংকৈল প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৪:০২ পিএম
বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, রয়েছে ৫৫ হাজার বিঘা কৃষি জমি। আশপাশে নেই কোনো যাতায়াতের রাস্তা, রয়েছে কৃষকের চরম কষ্ট, দুঃখ ও ভোগান্তি । চাষাবাদে কৃষক যেন নিজেই হয়ে উঠেছেন যান্ত্রিক বাহনের বিকল্প মাধ্যম। আবাদি জমির মধ্য দিয়ে গরুর গাড়ি, পাওয়ার টিলার, লরি, পিক আপ ভ্যানের যাতায়াতের কোন রাস্তা না থাকায় হাজার হাজার কৃষক চৈত্রের খরা রোদে নিজের ঘাড়ে করে ফসল বহন করে গন্তব্যে পৌঁছান। এই নিদারুণ কষ্টের দৃশ্য দেখার যেন কেউ নেই।
কৃষি কাজের এই সম্ভাবনাময় আবাদস্থল, হলো গৌরকই লোলতই বিল। এই বিলটি রাণীশংকৈল উপজেলার। ধর্মগড়, কাশিপুর, এবং নন্দুয়া ইউনিয়ন দ্বারা বেস্টিত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ফসলের মাঠ থেকে লোলতোই খালে পানি নিষ্কাশনের জন্য দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে নির্মিত একটি কালভার্ট দাঁড়িয়ে আছে। তবে নেই পরিপূর্ণ কোন রাস্তা। খননকৃত খালের জমানো মাটির অব্যবহৃত রাস্তা হচ্ছে ফসল ঘরে তোলার একমাত্র অবলম্বন। ফসল ফলাতে ৫ কিলোমিটার বিলের মধ্যে পায়ে হেঁটে যেতে হয় এবং ফসল পরিপক্ব হলে ঘারে ও মাথায় করে নিয়ে আসতে হয় পাঁকা সড়কের ধারে। এরপরে পরিবহন যোগে ফসল তুলতে হয় কৃষকদের। সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তুলতে না পারায় বাড়ছে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, লোলতোই বিলে আগে হাঁটু সমান পানি জমে থাকার কারণে বছরে একবার ফসল ফলানো সম্ভব হতো। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে। কৃষকদের চাষাবাদ সহজীকরণ ও গোরকই-লোলতই বিলে জমে থাকা পানি দূরীকরণে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে লোলতই বিলে ফসলের মাঠের মাঝ বরাবর বয়ে যাওয়া লোলতোই খাল খনন করেন৷ এর ফলে ২ হাজার হেক্টর জমিতে ৩ টি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু, বিস্তীর্ণ এই ফসলের মাঠের আশেপাশে, যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায়। সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের।
কৃষক আলমগীর বলেন,এখন জমিতে অনেক ভালো ফলন ফলছে। তা দেখে প্রাণ জুরিয়ে যায়। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার সময় দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় আমাদের। অনেক দুর থেকে ফসল মাথায় করে বয়ে আনতে হয়। তাই শ্রমিক পাওয়া যায় না। সময় মতো ফসল কাটতে না পাড়লে ফলন ঝড়ে যায়। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ক্যানেলের অব্যবহৃত রাস্তাটি যেন পাঁকা করে দেওয়া হয়।
লোলতই বিলে ক্যানেলের অব্যবহৃত রাস্তা পাঁকাকরণের দাবিতে গঠিত কমিটির আইন উপদেষ্টা ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ মেহেদী হাসান শুভ বলেন, হাজার হাজার কৃষকের কষ্ট লাঘবের জন্য প্রাথমিক ভাবে কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর, বিএডিসি, এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সাথে ক্যানেলের অব্যবহৃত রাস্তা পাঁকাকরণের জন্য মিটিং করেছি এবং মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট ১২ টি দপ্তরে রিপ্রেজেন্টেশন আকারের ফাইল প্রেরনের কার্যক্রম ইতিমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। আমি খুব শীঘ্রই ফাইল ইস্যু করবো।