আর্ন্তজাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
ইসলামবিরোধী এক অ্যাক্টিভিস্টকে সোমবার স্থগিত শাস্তি এবং জরিমানা করেছে সুইডেনের আদালত। ঘৃণা ছড়ানোর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই শাস্তি দেয়া হয় তাকে।
সুইডেনের নাগরিক সালওয়ান নাজিমকে ’চারবার মুসলমান জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের দায়ে’ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে স্টকহোমের জেলা আদালত জানিয়েছে।
নাজিমের সহপ্রচারক সালওয়ান মোমিকা মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন পোড়ানোয় জড়িত ছিলেন। গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তিনি। এমন এক সময় তিনি নিহত হন, যখন তার বিরুদ্ধে করা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার সময় হয়েছিল।
আদালত কী বলেছে?
স্টকহোমের আদালত জানিয়েছে যে, নাজিম এবং মোমিকা দুইজনই কুরআন অপবিত্র করা এবং ইসলাম, এর প্রতিনিধি ও মসজিদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সুইডেনের ডগেস নিয়েতে পত্রিকা লিখেছে, ’আদালতের যুক্তি হচ্ছে, কুরআন পোড়ানোর ঘটনা পরিষ্কারভাবে বস্তুনিষ্ঠ বির্তক এবং সমালোচনার সীমা অতিক্রম করেছে।’এভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে বলেও আদালত জানিয়েছে।
প্রধান বিচারক গিউরান ল্যুন্ডল এক বিবৃতিতে বলেন, যদিও বাকস্বাধীনতার কাঠামোর মধ্যে ধর্মের সমালোচনার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু তা ’কাউকে যেকোনো কিছু বলার বা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দেয় না যা সেই বিশ্বাসী গোষ্ঠীকে পীড়া দেয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে’। সুইডেনের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে লেখা আছে, ’কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টির অপরাধ বাকস্বাধীনতাকে সীমিত করে। তাই শাস্তিমূলক বিধানের প্রয়োগ সীমাবদ্ধভাবে করতে হবে।’
আপিল করবেন নাজিমের আইনজীবী
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের কাছে নাজিমের আইনজীবী বলেছেন, ’আমার মক্কেল মনে করেন, তার বক্তব্য ধর্মের সমালোচনার সুযোগের মধ্যে পড়ে, যা বাকস্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত।’
সুইডেনে ২০২৩ সালে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা বাকস্বাধীনতা এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর স্বাধীনতার ধরন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। অনেক আরব এবং মুসলিম দেশ কুরআন পোড়ানোর নিন্দা জানায় এবং সুইডেনের সাথে সেসব দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে।
মোমিকা এবং তার ’সহ-প্রতিবাদকারী’ সালওয়ান নাজিমের বিরুদ্ধে গত আগস্ট মাসে একটি জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।
চার্জশিটে বলা হয়, তিনি কুরআনে আগুন দেয়াসহ একাধিকবার ধর্মগ্রন্থটির অবমাননা করেছেন। এসব করার সময় মুসলমানদের জন্য মর্যাদাহানিকর নানা মন্তব্যও করেছেন তিনি। একবার স্টকহোম মসজিদের সামনে প্রতিবাদের আয়োজন করেন মোমিকা।