নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২:০২ পিএম
পলাতক হাসিনা সরকারের সময়ে বাংলাদেশ থেকে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন। সম্প্রতি, দেশটির কারাগার থেকে গুমের শিকার বেশ কয়েকজন দেশে ফিরেছেন, তবে এখনও ১৫৮ জনের খোঁজ মেলেনি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজধানীর উত্তরা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। ৬২ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা দায়ের করে। ৯ বছর পর ২০২৩ সালে তিনি ভারতের আদালতে খালাস পেলেও দেশে ফিরতে পারেননি।
অনেকটা একইরকম ভাবেই নিখোজ হন দেলাওয়ার হোসেন সাইদীর সাক্ষি সুখরঞ্জন বালী। ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি ভারতের কারাগারে পাঁচ বছর বন্দি ছিলেন।
তিনি জানান, তাকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয় এবং পরে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়ে তিনি দেশে ফেরেন।
মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার'-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ বছরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনও অন্তত ১৫৮ জনের খোঁজ মেলেনি। তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান চ্যানেল 24-কে এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের গুমের পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'র'-এর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অমূলক নয়। তিনি আরও জানান, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতার মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়েছে।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবিরের মতে, এটি একটি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ।
গুম কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগীদের অনেকেই এখনও ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন। তাদের উদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।