বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
logo

সুফল পাচ্ছেন ৩ উপজেলার ৭ লাখ মানুষ

মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (সওজ অংশ)


​​​​​​​বিশেষ প্রতিবেদক প্রকাশিত:  ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:১১ পিএম

সুফল পাচ্ছেন ৩ উপজেলার ৭ লাখ মানুষ

কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ মহেশখালী উপজেলায় 'মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (সওজ অংশ)' বাস্তবায়নের ফলে চকোরিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ সুফল পাচ্ছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে প্রকল্প এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে কৃষিপণ্য, লবণ, চিংড়ি মাছ, অন্যান্য সামুদ্রিক ও মিষ্টি পানির মাছসহ সব ধরনের কৃষি পণ্য সহজেই পরিবহন করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শহরে এবং শহরের পণ্য সহজেই গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে। নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখছে। সরকারি ও বেসরকারি সকল সেবা গ্রহণের জন্য মানুষ সহজেই সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারছে। পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে এবং টোল আদায়ের ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি (সওজ অংশ) যা মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ৪১৪ একর জমির ওপর নির্মিত ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের এক সহায়ক প্রকল্প। প্রকল্পটির ভৌত কাজের শতভাগ ইতিমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটির Defect Liability Period (DLP) চলমান রয়েছে। যা ২০২৫ সালের জুনে শেষ হবে। প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় ১০২৪.৭৯ কোটি টাকা। জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়িত মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি (সওজ অংশ) বদরখালি নৌ-পুলিশ স্টেশন থেকে শুরু হয়ে ইউনুসখালীতে মোড় নিয়ে কোহেলিয়া নদীর উপর নব নির্মিত কোহেলিয়া সেতু হয়ে উত্তরে রাজঘাট এবং দক্ষিণে মুহুরিঘোনা পর্যন্ত বিস্তৃত। 

মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (সওজ অংশ) মাতারবাড়ী ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা (দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন) দ্বীপ ইউনিয়ন দু'টিকে সড়ক পথে সরাসরি ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (এন১) মহাসড়কের চকোরিয়া পয়েন্টে সংযুক্ত করেছে। প্রকল্পটির মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১২.৫৮ কিলোমিটার, মোট সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৪৮.৫০ মিটার; এর মধ্যে শুধু কোহেলিয়া সেতুর দৈর্ঘ্য ৮৯৫ মিটার। এই প্রকল্পে ১২টি কালভার্টের মোট দৈর্ঘ্য ৩৭.৬০ মিটার, রয়েছে ৪টি স্লুইচ গেট; যার মোট দৈর্ঘ্য ২১.৯৫ মিটার। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, সুনামী ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যাতে বাঁধ কাম সড়কের ক্ষতি না হয় সেজন্য কংক্রিট ব্লক দিয়ে সড়ক ঢাল রক্ষাপ্রদ কাজ করা হয়েছে। সড়ক কাম বাঁধের তলদেশের মাটি অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় সড়ক কাম বাঁধ যাতে দেবে না যায় সেজন্য ব্যবহার করা হয়েছে- পিভিডি (PVD), পিএইচডি (PHD) ও উচ্চ শক্তি সম্পন্ন জিওটেক্সটাইল (High Strength Geotextile)। এছাড়াও রয়েছে সড়ক সাইন, সড়ক বাতি, রোড মার্কিং, ডব্লিউ-বিম ও টোল প্লাজাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ।

এছাড়াও সড়ক কাম বাঁধটি সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, সুনামী ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মাতারবাড়ী, ধলঘাটা ইউনিয়নের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিবে এবং মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।