অবৈধ ব্যাটারী কারখানা - পর্ব ১
মুহাম্মদ জুনায়েদ, ঢাকা প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
আশুলিয়ায় অন্তত এক ডজন ব্যাটারি তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে; যার অধিকাংশেরই পরিবেশ অধিপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এদের মধ্যে অন্যতম হলো আশুলিয়ার প্রাণ কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু রোডে ম্যাক্সিম লেভেল ফ্যাক্টরির পাশে জনবহুল এলাকায় অবস্থিত ‘ইলং ব্যাটারী’। যাদের নেই কোনো সরকারি অনুমোদন। অনুমোদন ছাড়াই স্বগৌরবে চলছে এই ‘ইলং ব্যাটারী’।
অভিযোগ রয়েছে, ব্যাটারি উৎপাদনের মূল উপাদান সিসা, কাঁচামাল পুরো শেড জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কয়েকজন শ্রমিক কোনো নিরাপত্তা সামগ্রী ছাড়াই কাজ করছেন বিষাক্ত এ কারখানায়।
কারখানার পেছনে বসবাস করা রহিমা জানান, কারখানা থেকে বাজে গন্ধ ও ধোঁয়ার মতো কিছু একটা বের হয়। এতে আমাদের নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। এ বছর আম গাছে মুকুল আসেনি, অনেক গাছের পাতা পুড়ে যাচ্ছে। শুনেছি, এ ধোঁয়া নাকি বিষাক্ত। আমাদের শরীরে রোগ হবে। কিন্তু প্রশাসন যদি এসব বন্ধ না করে, আমরা কীভাবে বাঁচব?
জানা যায়, ইলং ফ্যাক্টরি প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার পিছ লিড এসিড ব্যাটারি ও ২০০ সেট ড্রাই ব্যাটারি উৎপাদন করে থাকে। উৎপাদিত ব্যাটারির বাজার দর অনুযায়ী যে পরিমাণ ভ্যাট সরকারকে দেওয়ার কথা রয়েছে, তার ৫ শতাংশও তারা প্রদান করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বার বার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং নিজেদের এবিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তি নয় বলে পরিচয় দেয়। ইলং ফ্যাক্টরির কর্ণধার মিস চম্পার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুবকর সরকার দৈনিক আজকের বাংলাকে জানান, আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। যে কারখানার সকল কাগজপত্র ঠিক থাকবে না সেগুলো অবশ্যই গুড়িয়ে দেয়া হবে। আমরা সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ৮টি প্রতিষ্ঠানকে গুড়িয়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সাভারের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ সীসা কারখানা, ব্যাটারি কারখানা ও অবৈধ ইটভাটা আছে, সেসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। অবৈধ সীসা কারখানায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুজনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।