বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
logo

পর্যটনের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও রেখেছে অবদানের ছোঁয়া

রানী রাসমণির ঘাট


সৌরভ মজুমদার চট্টগ্রাম প্রকাশিত:  ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম

পর্যটনের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও রেখেছে অবদানের ছোঁয়া

 

 

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করে যে কাউকেই। পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র কি নেই এই নগরীতে। চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে হাজারো মানুষ। এই সকল দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রানী রাসমণির ঘাট অন্যতম। 

নগরীর সাগরিকা জহুর আহমম্মেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের পাশেই এর অবস্থান। স্থানীয়দের কাছে এটি কাট্টলী সমুদ্র সৈকত বা জেলেপাড়া সমুদ্র সৈকত নামেও পরিচিত। স্থানটি পর্যটন কেন্দ্র না হলেও প্রতিদিন এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখতে ভীড় করে শত শত মানুষ।

রানী রাসমণির ঘাটের নামকরণের পেছনে আছে এক চমৎকার ইতিহাস। জানা যায়, রানী রাসমণির ঘাটের আগের অবস্থান ছিলো আরো দক্ষিণে গলাচিপা নামক স্থানে। সেই ঘাটে একবার রানী রাসমণি স্নান করেন, তাই তার নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয় রানী রাসমণির ঘাট। 

সেই ঘাটে চৈত্র মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী বা বারুণী তিথিতে বারুণীর স্নানের আয়োজন করা হতো। বারুণীর স্নানকে কেন্দ্র করে সেখানে একটি মেলাও হতো, যা গলাচিপার মেলা নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ঘাটটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংস্কার করে বর্তমান স্থানে আনা হয়। এখনো প্রতি বছর এই ঘাটে বারুনীর স্নানের আয়োজন করা হয়, তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই ঘাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

পর্যটন কেন্দ্র না হয়েও এখানে লেগে থাকে পর্যটকদের ভিড়। এই পর্যটকদের কেন্দ্র করে এখানে নানা রকমের পসরা সাজিয়ে বসেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। শিশুদের জন্য আছে নাগরদোলা, চোরকিসহ অন্যান্য খেলাধুলার আয়োজন। যে কোন ছুটির দিনেই জমজমাট হয়ে ওঠে এই স্থান। 

পর্যটন ছাড়াও এই ঘাটের রয়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। ইলিশের মৌসুমে এই ঘাটে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এখানকার মাছের আড়ত গুলোতে আনা হয় টনকে টন রুপালি ইলিশ। আর সেই ইলিশ পাইকারদের হাত পেরিয়ে পৌঁছে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘুরতে এসে সাধারন মানুষজনও কিনে নিয়ে যায় এখানকার রূপালি ইলিশ। এই ঘাট সংলগ্ন জেলে পাড়ার বেশিরভাগ জেলের কর্মসংস্থানের উৎস রানী রাসমণির ঘাট। 

শহর সংলগ্ন এবং যাতায়াতের খুব সহজ ব্যবস্থা থাকায় দর্শনার্থীরা রানী রাসমণির ঘাটে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভবন, সারি সারি নৌকা, লাল কাঁকড়ার ঝাঁক ও জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য মুগ্ধ করবে যে কাউকেই। সরকারের সুদৃষ্টি পেলে রানী রাসমণির ঘাট খুলে দিতে পারে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা।    

চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে খুব সহজেই রানী রাসমণির ঘাটে আসা যায়। নগরীর এ.কে খান কিংবা অলংকার মোড় থেকে রিক্সা নিলেই রিক্সা চালক পৌঁছে দিবেন আপনার সেই কাঙ্খিত স্থানে। যাওয়ার পথেই চোখে পরবে সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম।