নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া জগতে আলোচনার শীর্ষে যে নাম গুলো উঠে আসে তারমধ্যে আলোচিত এক নাম স্মিতা চৌধুরী। নিজের সৃজনশীলতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার বিশাল প্ল্যাটফর্মে নিজের অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।
পড়াশোনায় মেধাবী স্মিতা কলেজ জীবন থেকেই উপস্থাপনা শুরু করেন। শুদ্ধ উচ্চারণ, রুচিশীলতা, বাংলা-ইংরেজিতে সমান দক্ষতার কারণে ২০১৭-১৮ সাল থেকে চট্টগ্রামে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তিনি চট্টগ্রামের শীর্ষ উপস্থাপিকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। পেয়েছেন চট্টগ্রামের সেরা উপস্থাপিকা হিসেবে Best Anchor Award of 2017.
স্মিতা শুধুমাত্র শুধুমাত্র একজন ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সরই নন, তার গড়ে তোলা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমানভাবে প্রভাব ফেলছে।
স্মিতার সোশ্যাল মিডিয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল বেশ সাধারণভাবে, কিন্তু তার ভিন্নধর্মী কন্টেন্ট এবং সৎ পরামর্শ তাকে দ্রুত পরিচিতি এনে দেয়। গত ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে C Sports আয়োজিত অনুষ্ঠান ‘বিশ্বকাপ যতোদিন, উপহার জিতে নিন’ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পান স্মিতা।
এর আগে থেকেই অত্যন্ত সফল এংকর হিসেবে চট্টগ্রামে সবার পরিচিত মুখ হলেও এই অনুষ্ঠান রাতারাতি দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে তুমুল জনপ্রিয় সেলিব্রিটিতে পরিণত করে তাঁকে। ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়েও ২০২৩ সালে বংগো বুম আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড কাপ ক্রিকেট ট্রিভিয়া’ অনুষ্ঠানটিও প্রচুর জনপ্রিয়তা পায়।
ফ্যাশন, বিউটি, ট্র্যাভেল এবং লুকবুক শেয়ারিংয়ের পাশাপাশি স্মিতা বরাবরই তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে চট্টগ্রামের স্থানীয় ব্যবসা, সেবা এবং খাবারকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তার পোস্টগুলো কখনও শহরের ঐতিহ্যবাহী বাজার, কখনও কোনো স্থানীয় ক্যাফে বা নতুন স্টার্টআপ নিয়ে হয়ে থাকে। এটি তাকে শুধু চট্টগ্রামের মানুষদের নয়, দেশ ও বিদেশের দর্শকদের কাছেও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
স্মিতার বিশেষত্ব, তিনি কখনোই তার চট্টগ্রামের আঞ্চলিকতা হারাননি, বরং তিনি সেটিকে সৃজনশীলতার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি দিয়েছেন। স্মিতার কাজের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে জায়গা পেয়েছে।
স্মিতার সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও বেশ অবদান রেখেছেন। বিশেষ করে নারী empowerment, মানসিক স্বাস্থ্য, এবং পরিবেশ সচেতনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তার পোস্টে উঠে এসেছে। তিনি তার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তরুণদেরকে মানসিক চাপ, আত্মবিশ্বাস এবং জীবনযাপন নিয়ে সচেতন করেছেন। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যাদুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সাহসী উদ্যোগ সকল মহলে ব্যপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
স্মিতা বর্তমানে অনেক নামকরা ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন, যেমন ফ্যাশন, বিউটি এবং লাইফস্টাইল পণ্যের পাশাপাশি প্রযুক্তি, গ্যাজেট এবং ট্র্যাভেল ব্র্যান্ডগুলির সঙ্গে তার কোলাবোরেশনও রয়েছে।
আজকের দিনে যখন ঢাকার বাইরে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির জনপ্রিয়তা তৈরি হওয়া কঠিন, তখন স্মিতা চৌধুরী প্রমাণ করেছেন যে, স্থান কিংবা অবস্থান বড় বিষয় নয়, সৃজনশীলতা এবং পরিশ্রমই মূল চাবিকাঠি। চট্টগ্রাম থেকে উঠে আসা এই তরুণী তার অনন্য বিষয়বস্তুর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে নিজের দাপট তৈরি করেছেন।
বর্তমানে স্মিতা শুধুমাত্র একটি সোশ্যাল মিডিয়া ফিগারই নন, তিনি একজন উদ্যোক্তা ও সোশ্যাল অ্যাডভোকেট। ভবিষ্যতে, তার আরও বড় লক্ষ্য রয়েছে নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করার পাশাপাশি আরও বড় আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করার।