পিরোজপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও কর্মচারীদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের আগে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা গ্রহণ, মেডিকেলের সরকারি কোয়াটারে কয়েক বছর ধরে বসবাস করেও ভাড়া কর্তন না করা, অফিসের বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার করে অর্থ আত্মসাৎ,অফিসের স্টাফদের সাথে বাজে আচারণ সহ অসংখ্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এইসব ঘটনার বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
জানাযায়, গত ২০২২ সালের মার্চ মাসে শরণখোলা উপজেলা থেকে বদলী হয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন। সেই থেকে বসবাস করেন সরকারি কোয়াটারে, তবে অভিযোগ উঠেছে গত ৩১ মাস বসবাস করলেও সরকারি কোষাগারে ভাড়া বাবদ মুল বেতনের (৪৯,৯৮০ টাকা) ৩৫% শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানেই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন, একটি টাকাও জমা দেননি। এমনকি সরকারি কোয়ার্টারে থাকার বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের কাছে সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
পিরোজপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্টাফ মোঃ নাছির ফকির বলেন, ম্যাডাম (ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন) যোগদানের পর থেকেই আমাদের স্টাফদের নানা রকম ভাবে হেনস্তা করতো,বাজে ব্যবহার করা হতো। এমনকি তার দেওয়া অফিসের বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার আমরা গ্রহণ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হতো। কোনো স্টাফ তার এই সব দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে শাস্তিমূলক নোটিশ দেওয়া হতো।
তিনি আগে যেখানে কর্মে ছিলেন সেখানেও দুর্নীতি ও অভিযোগের কারণে বদলী হয়েছে, এখানেই একই অবস্থা। সরকারি কোয়ার্টারে থেকেও একমাসেরও ভাড়া কোষাগারে দেননি। এমনকি দুর্নীতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের আগে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা গ্রহণ করেছে। তদন্ত করলে সব দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। আমরা সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ দিয়েছি, আমরা বিচারের দাবি জানাই।
এই অফিসের অফিস সহকারী (এমএলএস) শ্যামল চন্দ্র বিশাস বলেন, ম্যাডাম (ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন) আমাদের মানুষই মনে করতো না। যখন যা ইচ্ছে নাম ধরে ডাকতো। এই প্রায় আড়াই বছর তিনি এখানে, তার কাছ থেকে আমরা স্টাফরা কখনো সম্মানসূচক ব্যবহার পাইনি। বিভিন্ন অনিয়ম করলেও আমরা কিছু বলতে পারতাম না। উল্টো আমাদের নামে দেওয়া হতো শাস্তিমূলক নোটিশ।
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের পিছনে ডাক্তার ও স্টাফদের জন্য নির্মিত সরকারি কোয়াটারের একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন কোয়াটারের ১ নং ভবনের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশে ইউনিটে বসবাস করেন আর তার উল্টো (পূর্ব) পাশে থাকেন জেলা হাসপাতালের আরএমও ডাঃ নিজামউদ্দীন।
তবে সরকারি কোয়ার্টারে থাকা নিয়ে ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিনের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন,আমি কোনো সরকারি কোয়ার্টারে থাকি না,ভাড়া কেনো দিবো। তার দাবি তিনি প্রতিদিন অফিসের কাজ শেষে খুলনা (তার বাড়িতে) চলে যান,পরের দিন সকালে আবার বাড়ি থেকে কর্মস্থালে ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ শুনেছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।