আশরাফ আহমেদ, হোসেনপুর প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:১২ পিএম
দূর থেকে দেখে মনে হয়, রুপের রাণী হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে বিছিয়ে রেখেছে। দিগন্ত জোড়া মাঠে শুধু হলুদ আর হলুদ। দলে দলে মৌমাছিরা মধু আহরণে ছুটে আসছে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হলুদ মাঠ। প্রকৃতিপ্রেমীরাও পিছিয়ে নেই। পরিবারের সদস্যরা কিংবা কপোত কপোতিরা ছুটে আসছে দিগন্ত জোড়া হলুদ মাঠ দেখতে। সবাই ব্যস্ত ফটো সেশন নিয়ে। এমন প্রকৃতিকে ফটোর ফ্রেমে বেঁধে রাখতে কেনা চায়? কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চলতি রবি মৌসুমে চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।এ বছর ফলন ও হয়েছে বাম্পার। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে শুধুই হলুদের সমারোহ। তবে সরিষা ফুলের কদর থাকায় ওই ফুল বিক্রি করে অনেকেই করছেন বাড়তি উপার্জন ।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১হাজার৫শ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। সরিষা ফুলের কদর বেশি থাকায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। কৃষকরা জানায়, সরিষার ফুল দিয়ে গৃহিণীরা মজাদার পিঠা ও বড়া তৈরি করেন বিধায় সর্বত্রই সরিষা ফুলের চাহিদা রয়েছে।
সরোজমিনে উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের চরকাটি হারী গ্রামের কৃষক আবুল বাশার, সাহেবের চর গ্রামের ফরিদ উদ্দিন, আলামিনসহ অনেকেই জানান, এবছর তারা সরিষার ফুল বিক্রি করে প্রত্যেকেই অর্ধলক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। তারা আরো জানান,সরিষা চাষে তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ কম কিন্তু লাভের পরিমাণ বেশি। তাই এবার অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষার আবাদ করেছেন এবং ফলনও হয়েছে ভালো। এ সময় উপজেলার চর জামাইল গ্রামের কৃষক নবী হোসেন ও নুরুল হুদা সহ অনেকে জানান, তারা এ বছর ৪বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করে ১৩ হাজার টাকার খরচ করেছেন কিন্তু ফুল বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী জাহিদ হাসান রণি জানান,অনুকূল আবহাওয়া ও সরকারে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়ায় কৃষকরা কম খরচে সরিষা আবাদ করে বাম্পার ফলনসহ সরিষার ফুল বিক্রি করে মোটা অংকের আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তাছাড়া পরিপক্ক সরিষা উৎপাদন করে আরো বেশি লাভবান হবেন কৃষকরা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।