বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫
logo

সদরপুরের বালু ব্যবসায়ী, মাদক সম্রাট আহাদ গ্রেফতার


জাহিদ হোসেন সজল প্রকাশিত:  ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:১২ পিএম

সদরপুরের বালু ব্যবসায়ী, মাদক সম্রাট আহাদ গ্রেফতার

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে বালু ও মাটি লুটের গড ফাদার হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তি মোঃ আহাদুজ্জামান খা ওরফে আহাদ। ঢেউখালী ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুুল কুদ্দুস খানের পুত্র সে। 
২০১৪সাল থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের দোহাই ও ভাই পরিচয় দিয়ে রাতারাতি ক্ষমতা ও অর্থের মালিক বনে যান। তার বিরুদ্ধে সদরপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোতালেব হোসেন।
সদরপুর থানা পুলিশ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে চন্দ্রপাড়া বাজারের একটি দোকান থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে পুলিশ আসে। বর্তমানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ।
আহাদের যেভাবে উত্থান হয়, মোঃ আহাদুজ্জামান খা ওরফে আহাদ খা। ১৯৮৪সালে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া সুলতানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময় থেকে স্কুলের দপ্তরি হিসাবে নিয়োগ পায় আহাদ। কোনো মতে সংসার চললেও ভাগ্যবদলের চাবি পেয়ে যান ২০১৪সালের মাঝামাঝি সময়ে। ওই ফরিদপুর-৪ আসনে আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। আহাদ স্কুলের চাকুরী বাদ দিয়ে যোগদেন স্থানীয় সাংসদের সাথে। এরপর সে এমপি কে দাদা ভাই বলে সম্বোধন করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে, গরীব মানুষের জায়গা জমি দখলে ছিলেন গুরু হিসেবে। এরপর তার নিজ বাড়ি চন্দ্রপাড়া এলাকার পাশেই রয়েছে পদ্মা-আড়িয়াল নদী। শুরু করেন অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে চন্দ্রপাড়ার প্রায় এক অংশ গ্রামের জায়গা দখল করে বালুমাটির স্তপ (বেড) তৈরি করেন। শত শত বিঘা জমির উপর স্তপকৃত বালু বিক্রি শুরু হয়। এছাড়াও এলাকায় তার দখলে নেয় ইয়াবা’র ব্যবসা বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক এলাকাবাসী জানিয়েছেন। 
রাজনীতিতে এসে হঠাৎ আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পাওয়ায় ২০২২সালে স্কুলের দপ্তরির চাকরী ছেড়ে দেয়। মাদক ও নদীর অবৈধ বালু বিক্রির টাকায় ভাঙ্গা বাড়ি থেকে তৈরি করেন আলিশান ড্রপলেক্স বাড়ি। যে বাড়িতে এমপি নিক্সন চৌধুরীর ছবি টাইলস দিয়ে বাধিয়ে দিনরাত পূজা করলেও গত চব্বিশের ৫আগষ্টের পর ওই ছবি আবার হাতুরী দিয়ে উঠিয়ে ফেলে। ওই ছবি ফেসবুকে পোষ্ট ভাইরাল হলে আহাদ প্রকাশ্যে তিনি বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন। একজন সামান্য স্কুল দপ্তরি থেকে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। 
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী তার নির্যাতনের শিকার হয়ে বলেন, আহাদ কে পুলিশ আটক করায় আমরা অনেক খুশি। ওর বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এব্যাপারে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোতালেব হোসেন জানান, আহাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানুষের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।