বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫
logo

রাজউক চেরাগে কোটিপতি তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি কাবুল হোসেন

জালিয়াতি, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ


নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রকাশিত:  ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:১২ পিএম

রাজউক চেরাগে কোটিপতি তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি কাবুল হোসেন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জোন-৭ এর পরিচালকের দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর কাবুল হোসেন শেখের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজউকের পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের প্লট বরাদ্দের নথি জালিয়াতি, গায়েব, বিনষ্টকারী, ভবনের জাল নকশা করে দেওয়া, দপ্তরের বিভিন্ন চিঠিপত্রে কর্মকর্তাদের জাল স্বাক্ষর দিয়ে চিঠিপত্র তৈরি করার গুরুতর অভিযোগ থাকলেও রাজউকের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি কাবুল হোসেন শেখের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি রাজউক কর্তৃপক্ষ। 
দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজউকে চাকরি করার সুবাদে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে কাবুল হোসেন শেখ অবৈধ উপায়ে কোটিপতি বনে গেছেন। ঢাকায় ও নিজ গ্রামের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। কোটি টাকা দামের গাড়িও রয়েছে তার। অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। 
১৫, মায়াকানন, সবুজবাগ, ঢাকার বাড়িটিতে সি-৩ তে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। সুসজ্জিত অবস্থায় যার মূল্য হবে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা। 
কাবুল হোসেন শেখ ছাত্রলীগের নেতার পরিচয়ের বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে রাজউকের সব সেক্টরে প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ উপায়ে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা, কিনেছেন জমি, গাড়ি এবং ফ্ল্যাট। 
অভিযোগ থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা দিয়ে সকল অভিযোগ ধামাচাপা দিয়ে কাবুল এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের একাধিক কর্মচারিদের নিকট হতে এমন তথ্য জানতে পারা গেছে।
কাবুল হোসেন শেখের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর রামদিয়া এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত আতিয়ার রহমান শেখ। 
কাবুল হোসেন শেখ ছাত্রজীবনে গোপালগঞ্জের রামদিয়া কলেজের ভিপি ও ছাত্রলীগের থানা পর্যায়ের নেতা হিসেবে রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কাবুল ২০০১ সালে রাজউকে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১৫ সালে তাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
কাবুল হোসেন শেখের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে কাবুল হোসেন শেখ বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি অনিয়মের সাথে কখনোই জড়িত ছিলাম না। আমি যা কিছু করেছি বেতনের টাকা দিয়ে করেছি। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। 
রাজউক জোন-৭ এর পরিচালক (অ:দা:) শীলাব্রত কর্মকারের নিকট তার দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর কাবুল হোসেন শেখের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি, তাই এসব বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশক্রমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। 
এ ব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।