রাজধানীর রমনা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দায়ের করা মামলায় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান মজুমদার আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
এর মাধ্যমে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। এ ছাড়া চার্জ গঠনের সময় সম্রাট পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালীন ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে আটক করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাকে করা হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ। ওই দিন দুপুর ২টার দিকে র্যাবের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে বাহিনীটির একটি দল কাকরাইলে ভুঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে।
এ সময় সম্রাটের কার্যালয়ে ক্যাঙারুর দুটি চামড়া, মাদক, অস্ত্র পাওয়া যায়। তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ১৬০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
মাদক মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, যুবলীগ নেতা সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তার সহযোগী আরমানের সহযোগিতায় তিনি মাদকদ্রব্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের কোনো বৈধ কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবগুলো পরিচালনা করতেন তিনি।
তার নিয়ন্ত্রণেই এসব ক্লাবে ক্যাসিনোসহ জুয়ার আসর বসত। এভাবে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হন। প্রতি মাসে ক্যাসিনো খেলার জন্য সিঙ্গাপুরেও যেতেন তিনি। সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতেন। তার সহযোগী ছিলেন কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ এবং যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া মদ ও ইয়াবার রাসায়নিক পরীক্ষা করা হয়েছে। মদের বোতলে অ্যালকোহলের নমুনা পাওয়া গেছে। জব্দ করা ট্যাবলেটে ইয়াবার উপাদান পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে মোট ১৯ বোতল বিদেশি মদ পাওয়া গেছে, যার দাম ৯৫ হাজার টাকা। আর জব্দ করা ইয়াবার দাম ৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।