আর্লিং হালান্ডের জোড়া গোলে দুই দুই বার এগিয়ে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু সেই লিড ধরে রাখতে পারলেন না গোলরক্ষক এদেরসন মোয়ারেসের জোড়া ভুলে। তাতে জয়ের খুব কাছে এসেও হারতে হলো তাদের। অথচ দারুণ কিছু সেভ করেছিলেন এদেরসন। দারুণ এক জয়ে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ পেলো গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
মঙ্গলবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেওয়ার প্লে-অফ ম্যাচের প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার সিটিকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালের হয়ে তিনটি করেছেন কিলিয়ান এমবাপে, ব্রাহিম দিয়াজ ও জুড বেলিংহ্যাম।
তবে শুরু থেকে লড়াই হয় সমান তালেই। গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা পায় রিয়ালই। একাদশ মিনিটে ডান প্রান্তে ফাঁকায় পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপে। পরের মিনিটে দারুণ এক ক্লিয়ারেন্স নাথান আকের। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে আগুয়ান গোলরক্ষক এদেরসনকে এড়িয়ে ফাঁকায় থাকা মেন্দিকে পাস দিয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস। তার শট ঠেকিয়ে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন আকে।
১৯তম মিনিটে হালান্ডের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। তবে এই গোলের মূল কারিগর জেস্কো ভার্ডিওল। শুরুতে নিজের অর্ধ থেকে দারুণ এক থ্রু পাস দেন হালান্ডকে। বল ধরে গ্রিলিসকে পাস দেন এই ফরোয়ার্ড। এরপর গ্রিলিসের ক্রস বুক দিয়ে নামিয়ে হালান্ডকে দেন ভার্ডিওল। আলতো টোকায় বল জালে জড়াতে কোনো ভুল হয়নি এই নরওয়ের এই ফরোয়ার্ডের।
২৫তম মিনিটে ভিনিসিয়াসের শট গোলরক্ষক এদেরসন ঝাঁপিয়ে ঠেকলে বারপোস্টে লিগে বেরিয়ে যায়। নয় মিনিট পর বদলি খেলোয়াড় ফোডেনের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকান থিবো কর্তুয়া। দুই মিনিট পর হালান্ডের শট আসেন্সিও স্লাইড দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে না ঠেকালে ব্যবধান বাড়াতে পারতো সিটি। তবে সেই কর্নার থেকেও সুযোগ ছিল। আকেঞ্জির হেড ক্রসবার ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৪৩তম মিনিটে ফেদে ভালভার্দের ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। তবে যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপে। একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও উড়িয়ে মারেন তিনি। তাতে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে চায় চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতির পরপর বড় বাঁচা বেঁচে যায় রিয়াল। হালান্ডের শট বার পোস্টে লিগে ফিরে আসে। ৫৩তম মিনিটে বেলিংহ্যামের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। দুই মিনিট পর এমবাপের শট ঠেকান এদেরসন। ৬০তম মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। সেবাওসের ক্রস থেকে এমবাপের পায়ে ঠিকঠাক না লাগলেও জালে জড়ায় বল।
৬৩তম দারুন সুযোগ নষ্ট করেন ভালভার্দে। লক্ষ্যে থাকলে এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল। তিন মিনিট পর তো অবিশ্বাস্য সেভ এদেরসনের। বেলিংহ্যামের শট ঠেকান তিনি। ৮০তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় সিটি। আবারো গোলদাতা সেই হালান্ডের। সফল স্পটকিকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ডি-বক্সে ঢোকার মুখে ফিল ফোডেনকে সেবাওস ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
৮৫তম মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। মাঝমাঠে এদেরসনের দেওয়া ভুল পাসে বল হারালে সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নেন ভিনিশিয়াস। তার শট ঠেকাতে পারলেও আলগা বলে বদলি খেলোয়াড় ব্রাহিম দিয়াজের নেওয়া শট ঠেকাতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক।
ম্যাচের যোগ করা সময় রক্ষনের ভুলে বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস। বল নিয়ে ঢোকার সময় টাকে চার্জ করছিলেন এক ডিফেন্ডার। কিন্তু এডারসন আসেন এগিয়ে। তাই দেখে ডান প্রান্তে এগিয়ে আসা বেলিংহ্যামকে পাস দেন ভিনি। ফাঁকা পোস্টে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এই ইংলিশ মিডফিল্ডারের।