বাংলাদেশ ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে নজরদারি ড্রোন পরিচালনা করছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তুরস্কের তৈরি টিবি-টু বায়রাক্টার ড্রোন হাতে পেয়েছে এবং তা ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছাকাছি অঞ্চলে নজরদারির কাজে ব্যবহার করছে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে এএনআই জানিয়েছে, ভারতীয় সংস্থাগুলো এসব ড্রোনের উড্ডয়ন লক্ষ্য করেছে এবং সেগুলোর কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সূত্র আরও জানায়, গত কয়েক মাস ধরে এই ড্রোনগুলোর নজরদারি কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে এবং সেগুলো ভারতের সীমান্ত বরাবর বাংলাদেশের নিজস্ব ভূখণ্ডের ভেতরেই উড়ছে।
এ বিষয়ে ভারতও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করতে ভারত রাডার স্থাপনসহ অন্যান্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সূত্র আরও দাবি করেছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর টিবি-টু ড্রোন নজরদারি মিশনে কখনও কখনও ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় উড্ডয়ন করেছে।
বায়রাক্টার টিবি-টু: অত্যাধুনিক যুদ্ধ ড্রোন
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের অন্যতম বড় সাফল্য। এটি নজরদারির পাশাপাশি আকাশ থেকে স্থল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতেও সক্ষম।
মূলত তুরস্কের বাইকার টেকনোলজি কোম্পানি ২০১৪ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে এই ড্রোন উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এটি বিশেষ পরিচিতি লাভ করে।
বায়রাক্টার টিবি-টু-এর বৈশিষ্ট্য
✅ গোয়েন্দা নজরদারি, হামলা ও তথ্য সংগ্রহের সক্ষমতা
✅ উন্নত ইলেকট্রো-অপটিক্যাল ক্যামেরা ও ডাটা-লিংক সিস্টেম সংযুক্ত
✅ দুই থেকে চারটি পর্যন্ত লেজার-গাইডেড বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম
✅ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে নির্ভুল আক্রমণ পরিচালনা করতে পারে
✅ টেক-অফ, ল্যান্ডিংসহ পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হতে পারে
✅ একটি মোবাইল বেজ স্টেশন বা ট্রাক থেকে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে
ড্রোনের পারফরম্যান্স
🔹 গতি: ঘণ্টায় ১২৯-২২২ কিলোমিটার
🔹 নিয়ন্ত্রণ দূরত্ব: সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার
🔹 সর্বোচ্চ উচ্চতা: ২৫ হাজার ফিট
🔹 অবিরাম উড্ডয়ন সময়: সর্বোচ্চ ২৭ ঘণ্টা ৩ মিনিট
🔹 জ্বালানি ধারণক্ষমতা: ৩০০ লিটার
🔹 সর্বোচ্চ ওজন: ৭০০ কেজি
নজরদারি ও রিয়েল-টাইম ইমেজ ট্রান্সমিশন
ড্রোনে রিয়েল-টাইম ইমেজ ট্রান্সমিশন সিস্টেম থাকায় একাধিক ব্যবহারকারী একইসঙ্গে উচ্চমানের ভিডিও পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এটি ওয়েব-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে মোবাইল বা ট্যাবলেট দিয়েও নজরদারি করা সম্ভব।