ফেনীর পরশুরামে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ এলাকার মাটি কেটে সাবাড় করছে দুষ্কৃতিকারীরা। এই মাটি যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন ইটভাটায়। এভাবে মাটি কাটার কারণে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে মির্জানগর ও পৌর এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতবছরও একই কায়দায় মুহুরি নদীর দুইপাশে
বেড়িবাঁধের মাটি কেটে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। এতে নদীর একাধিক স্থানে ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক রহমত উল্যাহর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরশুরাম দুবলাচাঁদের বিপরীতে বেড়িবাঁধের চরের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ী ও দুষ্কৃতিকারীরা। এক মাস ধরে প্রতিদিন রাত ১২টার পর শুরু হয় মাটি কাটা। এতে এক্সকেভেটর ব্যবহার করা হয়। ১০-১২টি ট্রাক ও ট্রাকটর দিয়ে এসব মাটি নেওয়া হয় পাশের কয়েকটি ইটভাটায়। প্রতিদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত বেড়িবাঁধ কাটার মহোৎসব চলে। রাতভর পরশুরাম বাজারের প্রতিটি সড়কে চলে মাটি বহনের গাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়ন কাউতলী ও নিজকালিকাপুর এলাকায় রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। সেখানকার বাসিন্দা রাবেয়া আক্তার ও তাঁর ছেলে সৌরভ জানান, এক্সভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে প্রতিদিন রাতে মাটি কেটে নিয়ে যায়।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবাধে কৃষিজমির মাটি কেটে নিচ্ছে একটি দুষ্কৃতিকারী চক্র। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ওই চক্র দিনরাত সমানতালে মাটি বিক্রি করছে।
এলাকাবাসী জানান মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলী গ্রামের আবদুল
মুনাফ এবং হাবিবুর রহমান হাবিব ও সেলিম রাতে এক্সকাভেটর দিয়ে বেড়িবাঁধের মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ফেনী জেলায় মাটি কাটা বন্ধে প্রত্যেক উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে নির্দেশ দেওয়া আছে, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে। এরিমধ্যে কোন কোন উপজেলায় অভিযান হয়েছে। মাটি কাটার যন্ত্র আটক করে নিয়ে এসেছে। দুষ্কৃতিকারীরা পুনরায় মাটি কাটার যন্ত্র এনে রাতের আঁধারে মাটি কাটছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। সেটাও বন্ধ করতে প্রশাসনের লোকজনকে নিয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বেড়িবাঁধের মাটি কাটার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখবে, আমার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহযোগিতা করবে।