শনিবার, জানুয়ারী ৪, ২০২৫

থার্টিফার্স্ট নাইটে লাখো পর্যটক এর ভীড় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে

৫ শতাদিক হোটেল মোটেল বুকিং

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী , কক্সবাজার

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:১২ পিএম

থার্টিফার্স্ট নাইটে  লাখো পর্যটক এর ভীড়  কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে

থার্টি ফাস্ট নাইট ডে উপলক্ষে  কক্সবাজারে পর্যটকের ভীড়  লক্ষ্য করা গেছে  ।থার্টিফার্স্ট নাইট ডে  কক্সবাজারের পর্যটনের জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়। ২০২৪ সালকে বিদায় করে কে ২৫ সালকে  বরণ করতে কয়েক  লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন । নতুন  বছরে  পর্যটক আগমন বেশি হবে এবং ব্যবসা বানিজ্যও বেশ ভাল হতে পারে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার   (৩১ ডিসেম্বর ) বিকেলে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট গিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার পর্যটক সমুদ্রের লোনা জ্বলে গোসল করছেন।থার্টিফার্স্ট নাইট ডে  উপলক্ষে পর্যটক ও   স্থানীয়দের উপস্থিতি ছিল একটু বেশি । সমুদ্রসৈকতের নীল জলরাশি আর সোনালি বালুচরে প্রকৃতিপ্রেমীরা সময় কাটাচ্ছেন আনন্দে। শীতের  আমেজ ও থার্টি ফাস্ট নাইট ডে ঘিরে  কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে পরিণত করেছে পর্যটকদের মিলনমেলায়।   সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে ইনানী, হিমছড়ি, পাটুয়ারটেক, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, দরিয়ানগর,  রামু বৌদ্ধ মন্দির, ও  টেকনাফসহ জেলার বিভিন্ন  পর্যটন স্পটে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। 
খুলনা  থেকে আগত পর্যটক মোহাম্মদ রহিম উদ্দীন  জানান,   বিকালের সমুদ্র সৈকত অনেক সুন্দর ।  রাতের সময় আরও মনোমুগ্ধকর। শীতের আবহ সমৃদ্ধ কক্সবাজারের পরিবেশ যে কারোই মন জুড়াবে।
রংপুর  থেকে আগত পর্যটক সাহিন উদ্দীন বলেন , অনেকদিন পর কক্সবাজার এলাম। এবার ট্রেনে চড়ে আসার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। শীতের হালকা আমেজে সৈকতে সময় কাটানো সত্যিই আনন্দদায়ক।

সিলেট  থেকে আসা মাহমুদ সায়েমা  দম্পতি জানান, সৈকত ছাড়া কক্সবাজারে দেখার মতো তেমন কিছু নেই। এখানে পর্যটন নির্ভর নতুন কিছু হওয়া উচিত। এছাড়া খাবারের দোকানগুলোতে অতিরিক্ত দাম আদায় করা হচ্ছে। 
কক্সবাজার হোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইট ডে উপলক্ষে  কয়েক লক্ষ পর্যটক পর্যটক আসছেন ।  আশা করা হচ্ছে নতুন  বছর পর্যটকের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা হলেও  বাড়তে পারে। 
কলিম উল্লাহ বলেন, একজন পর্যটক চাইলে সীমিত বাজেটের মধ্যে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা নিয়ে কক্সবাজার ঘুরে যেতে পারেন। 
পর্যটন উদ্যোক্তা সাইফুল আলম  জানান - এখন  সড়ক, বিমান ও রেলপথে পর্যটকরা কক্সবাজারে আসতে পারছেন সহজেই। বিশেষ করে রেলের নতুন সংযোগ এবং রাত ১০টা পর্যন্ত বিমানের ওঠানামা পর্যটনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
কলাতলীর এসএ ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক শহিদুল ইসলাম, শীতের মৌসুম ও থার্টি ফার্স্ট নাইট ডে হওয়ায় কয়েক লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন । দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন আবার ভালো অবস্থানে ফিরছেন।
হোটেল দ্য কক্স টুডের জিএম আবু তালেব শাহ বলেন, থার্টি ফাস্ট নাইট ডে হওয়ায় পর্যটকদের ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, হোটেলে বুকিং বেশ ভালো আছে । সামনে নতুন বছরে আরও ভালো সময় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে  ।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী জানান, নতুন বছরে  ২/৩ মাস বেশ ভাল ব্যবসা বানিজ্য হবে। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। পর্যটকদের পজিটিভ রিভিউ পেতে হোটেল ভাড়া, গাড়ি ভাড়া  ও রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা জরুরী । এই জন্যে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। 
চৌধুরী  আরও জানান, আমাদের দায়িত্ব শুধু পর্যটকদের আকৃষ্ট করা নয় বরং এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখার উদ্যোগও নিতে হবে। পর্যটন স্পটগুলোর পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 
ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন , থার্টি ফাস্ট নাইট ডে উপলক্ষে  সৈকত ও অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছ সৈকত এলাকায় ফাটকা আতশবাজি  নিষিদ্ধ করা হয়েছে  । নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। 
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন,  সৈকত ও আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী কাজ করছেন । যানজট নিরসনে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ছিনতাই বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। 
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান,
পর্যটক হয়রানি ঠেকাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে  বিশেষ টিম কাজ করছে। এছাড়া সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে পর্যটকরা যে কোনো সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। 
তিনি আরও জানান, আবাসিক হোটেল ও খাবার রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দাম আদায় করার অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।