দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে। মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে যে, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৪৫৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে সাদ মুসা গ্রুপ।
দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সিভয়েস২৪’কে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা:
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন:
- কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান
- সিকদার গ্রুপের পরিচালক রন হক সিকদার (ব্যবস্থাপনা পরিচালক), তার ভাই রিক হক সিকদার, মা মিসেস মনোয়ারা সিকদার এবং বোন সাবেক সংসদ সদস্য পারভীন হক সিকদার
- পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম
- ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম শরীফুল ইসলাম
- সাবেক পরিচালক জাকারিয়া তাহের, মাবরুর হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. নায়েমুজ্জামান
- বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন
- সাদ মুসা গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ও সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোহসিন
ন্যাশনাল ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারা: এসইভিপি মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী, এভিপি মো. আখতার হোসেন, মো. আলমগীর হোসেন, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ নুরুন নবী, এসএভিপি হাছিনা সুলতানা, প্রিন্সিপাল অফিসার শেখ ফরিদ আহমেদ, ভিপি মোহাম্মদ আবু রাশেদ নোয়াব, ইভিপি অরুন কুমার হালদার, এসইভিপি ইফতেখার হোসেন চৌধুরী, ডিএমডি এ এস এম বুলবুল, এএমডি মো. বদিউল আলম ও চৌধুরী মোশতাক আহমেদ
অভিযোগ ও মামলা:
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সাদ মুসা হোমটেক্স এন্ড ক্লথিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা বিভিন্ন ঋণের শর্ত ভঙ্গ করে, জমি ক্রয়, সঞ্চয়ী আমানত ক্রয়, ঋণের কিস্তি পরিশোধসহ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত করেছেন।
এছাড়া, তারা অর্থের স্থানান্তর ও রূপান্তর গোপন করে, দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান ও আইনগত পদক্ষেপ:
দুদকের অনুসন্ধানকালে এসব অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২৯ আসামির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তকালে যদি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে অন্য কোনো অর্থ আত্মসাৎ বা অপরাধের সাথে অন্য কোনো ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এই মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ পেয়েছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন এই অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।