শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৫

শেরপুরে সেতু নির্মাণকাজ বন্ধে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি

শাহরিয়ার শাকির, শেরপুর

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম

শেরপুরে সেতু নির্মাণকাজ বন্ধে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি

৬ মাস ধরে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী নদীতে সেতু নির্মাণ বন্ধ রাখায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়ন থেকে শ্রীবরদী উপজেলার সঙ্গে সংযোগ সড়কের সোমেশ্বরী নদীর বাগেরভিটায় ২০ মিটার একটি সেতু নির্মাণকাজ হাতে নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে আরসিসি সেতুটি নির্মাণের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ২০২২ সালে ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজটি পায় শেরপুরের ধ্রুব টেডার্স। ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে গত বছরের আগষ্ট বিপ্লবের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কজ ফেলে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নির্মাণাধীন সেতুর পাশ দিয়ে পথচারীদের যাতায়াতের জন্য একটি ডাইভার্সন পথ করে দেওয়া হলেও পাহাড়ি ঢলে তা ভেঙে গেছে। ফলে এ পথে লোকজনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা নির্মাণাধীন সেতুর পাশ দিয়ে পায়ে আলার একটি টিনের প্লানসিটের সাঁকো তৈরি করে নদী পারাপার হচ্ছে। এতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণ শুরু হলেও কাজ চলে ধীরগতিতে। এতে এ পথে যাতায়াতকারী দুই উপজেলার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আমির আলী বলেন, হাসিনা সরকার পলানোর সাথে সাথে এ কামডা ফেলাইয়া পলাইছে। আমগোর এই সেতুডা দুই বছর ধইরা এমনেই পইড়া রইছে। এই পাড়ের মানুষ ওই পাড়ে যাইতে পারে না।
নিরব মিয়া বলেন, রোগী নিয়া ঘুইরা যাওন লাগে ১০ কিলোমিটার। কী যে একটা অশান্তির মধ্যে আমরা আছি, কাউরে বুঝাবার পারি না।’
হাসান আলী বলেন, আমাদের খুব অসুবিধা মেলা দুর ঘুইরা টাকা বেশি দিয়া যাওয়ন লাগে। আর কোন মালামাল এদিক দিয়া নিয়া যাবার পাইতাছি না।
অটোচালক রশিদ বলেন, আগে যেনু ভাড়া মারতাম ৮-১২শ টাকা এহন বাড়া হয় ৩-৪শ টাকা। কারণ নদীর এপাড়ে যাত্রী নাইমা পরে। আমরা চলবারও পাইতাছি না।

ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের সময়ে কাজ শুরু হয়েছিলো। সরকার পতনের পর থেকেই এ ঠিকাদারকে আমরা পাচ্ছি না। একটি সেতুর অভাবে দুই শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার হাজার হাজার লোক বিকল্প সড়কে চলাচল করছেন। আমরা কাজটি দ্রুত করার আমরা কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদের বলা কওয়াতে কোনরকম চলার জন্য একটা ছোট প্লানসিটের সাঁকো দিয়েছে। কিন্তু এটা দিয়ে হেটে যাওয়া যায় শুধু। গাড়ি না যেতে পারলে কোন লাভ নেই । এ কারণ আমার এলাকার লোকজন খুব দুর্ভোগে আছে।

কাজ ফেলে রাখার বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে শেরপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ধানশাইল টু ভটপুরের যে ব্রিজটার কথা বলতাছেন। ঐটা ২০ মিটার ব্রিজ। সেটা সাপোটিং রোলার ব্রিজ প্রকল্প থেকে বাস্তবায়ন হইতাছে। ঠিকাদার বেশকিছুদিন ধরে কাজ করে না। তবে তাকে সেতুটি নির্মাণের জন্য তাগাদা দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ২৮ দিনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে কাজটি যথাসময়ে না করলে তার কাজ বাতিল করে রিমেনিং ওয়ার্কের টেন্ডার করবো আবার।