ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে জনসাধারণের মাঝে ক্রমশ অসন্তোষ বাড়ছে।
ব্যবস্থাপনার অভাব,পর্যাপ্ত জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটের কারণে রোগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। তবে শীতকালীন সময়ে ও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক ও নার্স ঘাটতির পাশাপাশি রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব, এর ফলে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি মাত্র ১৫০ শয্যার জনবল নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৮০০-১২০০ রোগী এবং ওয়ার্ডে ভর্তি ৬০০ রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের ৩০৬টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২০৬ জন। ৯ জন সিনিয়র কনসালটেন্টের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৫ জন, ১২ জন জুনিয়র কনসালটেন্টের স্থলে আছেন ৬ জন। দীর্ঘদিন ধরে মেডিসিন, শিশু, রেডিওলজি, প্যাথলজি, সার্জারি, দন্ত, চক্ষু, চর্ম ও যৌন রোগে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। শিশু বিভাগেও রয়েছে মারাত্মক সংকট।
এদিকে শীতকালীন সময় ঠান্ডাজনিত কারণে নানান উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে বাড়ছে রুগীর চাপ ফলে চিকিৎসা সেবা ঠিকমতো পাচ্ছেনা রুগীরা। জরুরি সেবা বিভাগ হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে,বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে রোগীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ৭ জন চিকিৎসক। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর চাপ,তাই যথাযথ চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কয়েক দিন যাবৎ জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনিতে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু বিভাগে রোগীদের জায়গা কম।
কোনো শয্যাই খালি নেই। শয্যার অতিরিক্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বারান্দা ও করিডোরে।
চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের স্বজনদের কণ্ঠে উদ্বেগ, হাসপাতালের নানা অনিয়ম আর ভোগান্তির অভিযোগ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেকটা বেসামাল তারা।
কারণ,ইতিমধ্যে হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার, নার্সসহ বিভিন্ন পদে প্রয়োজনীয় জনবলের সংকট রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জ্বর-সর্দির রোগীর কারণে চিকিৎসা সেবায় অনেকটা হতাশাগ্রস্ত। রোগীর চাপে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসকদের। বহির্বিভাগে আসা রোগীর অর্ধেকই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে জরুরি বিভাগের সামনে অধীর অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে অভিভাবকদের।
অন্যদিকে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের স্বজনরা হাসপাতালের নানা অনিয়ম আর ভোগান্তির অভিযোগ করে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
শুধু শিশুরা নয়, মৌসুম পরিবর্তনের কারণে জ্বর-সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের একজন কর্মী আলো হাওলাদার বলেন,ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রুগী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমরা চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের এক কর্তব্যরত কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছে। আমার নার্সের সংখ্যাও কম, তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের বেশি হিমসিম খেতে হচ্ছে।
অপরদিকে হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মীরা কয়েক মাস ধরে বেতন,ভাতা না পাওয়ার কারণে তারাও নানান কষ্টে রয়েছে এর ফলে তারা কাজে অংশগ্রহণ করছেনা নিয়মিত।
এদিকে হাসপাতালের পরিচালক আর এম ও, ড. আসিফ ইকবাল বলেন শীতের এই সময় সর্দিকাশি,জ্বর নিয়ে বেশি রোগী ভর্তি এছাড়াও শিশুজনিত রোগ,ব্যাধি একটু তুলনামূলক বেশি,শিশু ডাক্তার কম এবং প্রয়োজনীয় কর্মীর অভাবে আমরা কিছুটা হিমসিম খাচ্ছি।