গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বেদম বেত্রাঘাতে ৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।এদের মধ্যে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমা তালুকদার প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। অহত অপর ২ শিক্ষার্থী হল ৭ম শ্রেণির তিতলী রায় ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির সৃজন শেখ।
স্কুলে জুতা পড়ে না যাওয়ায় শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বেত্রাঘাত করেন।মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় জেকেএমবি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারধরের এ অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে জলিরপাড়ের বিভিন্ন মহলে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এটি টক অবদা ইউনিয়নে পরিনত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অনিন্দিতা বালা জানায়, রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ক্লাসে জুতাপড়ে আসেনি অনেকে। তারা কেন জুতাপড়ে আসেনি। তা জানতে চান সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডল স্যার। তারা স্যারের প্রশ্নের ভাল উত্তর দিতে পারে নি ।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বেধরক বেত্রাঘাত করেন। এতে ৩ জন বেশি আহত হয়েছে। বেতের আঘাত আরো অনেক শিক্ষার্থীর শীরের লেগেছে।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আহত শিক্ষার্থী সৃজন শেখের বাবা বাচ্চু শেখ বলেন, লেখাপড়ার জন্য শাসন বা মারধর করলে আমার কোন অভিযোগ নেই। জুতা পড়ে যায়নি এ অপরাধে তাদের ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া যেত। অথবা ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলতে পারতেন সহকারী প্রধান শিক্ষক। এভাবে তাদের অন্যায়ভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। শুধু আমার ছেলে নয় ২ তরুণী শিক্ষার্থীকেও মেরে আহত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১ জন জলিরপাড় মধুমতি হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।আমি এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ননীক্ষীর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান শেখ বলেন, এ ঘটনায় ননীক্ষীর ইউনিয়নের জলিরপাড় বাজার ও পুরো ইউনিয়নে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে । অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডলের আগের অনেক বিতর্কিত কর্মকান্ড এলাকাবাসী ভালচোখে দেখছে না। তিনি মানুষ হিসেবেও ভাল নন। সোমবার যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে । বদ মেজাজী ওই শিক্ষাকে এ ঘটনায় বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডলের ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়। তিনি ফোন ধরেননি। ৪র্থবার তার মেয়ে ওই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুপ্তি মন্ডল ফোন রিসিভ করে জানায়, তারা বাবা ফোন রেখে বাইরে গেছে। তাদের ক্লাসেও তার বাবা বেত দিয়ে পিটিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্মল সাহা বলেন, স্কুল ড্রেস ও জুতা পড়ে আসতে শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে। প্রথম তাদের ৭দিন সময় দেওয়া হয়। তারপর পর আরো ৭দিন সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর আরো ১৫ দিন পরও অনেকে জুতা পড়ে স্কুলে আসেনি। তাই সহকারী প্রধান শিক্ষক কিছু শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেছে। পরে বিষয়টি অবিভাবক সহ অন্যান্যদের ডেকে মীমাংসা করা হয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধর করার কোন বিধান নেই । বিধি ভেঙে যদি কোন শিক্ষক মারধর করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা রয়েছে । এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।