বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫

গফরগাঁওয়ে ৬ একর জমি নিয়ে এক গ্রাম, 

বসবাস করেন ২জন-

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি,

প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:১২ পিএম

গফরগাঁওয়ে ৬ একর জমি নিয়ে এক গ্রাম, 

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে উপজেলায় এমন একটি গ্রাম আছে, যার নাম শরীফগঞ্জ। যেখানে রয়েছে একটি বাড়ি, সেই বাড়ীতে বসবাস করে স্বামী-স্ত্রী ২ জন। জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার দত্তেরবাজার ইউনিয়নে শরীফগঞ্জ গ্রামটি অবস্থান।  এটি স্বল্পপুনিয়া মৌজা অবস্থিত।  গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক ও স্ত্রী মাহফুজা বেগম মেরী। প্রায় ১৩০ বছর পূর্বে খান সাহেব আলী উনার বাবার নামের সাথে মিল রেখে গ্রামের নামকরণ করেন শরীফগঞ্জ। বাড়িতে বসবাসকারীরা মূলত মোঘল সেনাপতি রাজা মানসিংহের বংশধর। মানসিংয়ের বংশধর যোজার সিং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে এখানে বাড়ি নির্মান করে এখানে বসবাস করতে থাকেন। স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক যোজার সিংয়ের চতুর্থ বংশধর। রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক আমীর আলী'র (ডাবল এমএ) ছেলে। বর্তমানে স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক এই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন।

রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক দীর্ঘদিন উপজেলার টাংগাব হাজী ইসমাঈল দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে অবসর নিয়ে কান্দিপাড়া আলিমুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে  শিক্ষকতা করে সময় কাটাচ্ছেন। ৬ একর জায়গা নিয়েই শরীফগঞ্জ গ্রাম গড়ে উঠে। গাছ লতাপাতার সবুজের একটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ গ্রামের সুন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুণ । গ্রামের পূর্ব দিকে আছে স্বল্পপুনিয়া গ্রাম, উত্তর দিকে আছে নয়াবাড়ী গ্রাম, দক্ষিণ দিকে আছে ময়ড়া গ্রাম, পশ্চিমে আছে সতরবাড়ী গ্রাম।

শরীফগঞ্জে রয়েছে ছয়টি পুকুর। রয়েছে শতবর্ষী  ২৫ থেকে ৩০ রকমের আম, কাঠাল, জাম, লেচু, আপেল, কমলা, স্ট্রবেড়ী, আঙুরসহ ফলজ ও ঔষধিজাতে বিভিন্ন  প্রজাতির এক থেকে দেড় হাজার  গাছ। বাড়িতে রয়েছে আমীর আলী নামে একটি ইসলামিক পাঠাগার। যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি সহ ধর্মীয় অনেক বই পুস্তক রয়েছো। পাশের গ্রামের কলেজ ছাত্র মোহাম্মদ আরমান বলেন, শরীফগঞ্জ গ্রামের পরিবেশ খুব সুন্দর। এই গ্রামের দুইজন মানুষ বসবাস করেন। তাদের দুই সন্তান ঢাকায় থাকেন। তারা সবাই উচ্চ শিক্ষিত।

বর্তমানে বাড়িতে বসবাসকারী রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক আজকের বাংলাকে  বলেন, খান সাহেব আলী ময়মনসিংহ পৌরসভার প্রথম মুসলিম ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।  উনার বাবার নামের সাথে মিল রেখে শরীফগঞ্জ নাম করন করা হয়। উনি আমার দাদা হন। ১৯২২ ইং  রাজা পঞ্চাদশ উনাকে রোপ্য পদক প্রদান করে খান সাহেব উপাধি প্রধান করেন। জাতীয় দলের ক্রীকেট তারকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আমার ভাগিনা হয়। মাহমুদউল্লাহ বিয়াদ খান সাহেব আলীর তৃতীয় মেয়ের নাতি। 
আমাদের বংশে বর্তমানে ৮ জন মাস্টার্স ও ৫ জন ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে অনার্স মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণীতে পাস করেছি।  আমার বড় ছেলে ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার  সাইন্সে মাস্টার্সে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। দ্বিতীয় ছেলে ডুয়েট থেকে আর্কিটেডে পড়াশোনা করছেন। গফরগাঁও আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের প্রিন্সিপাল এইচ কবীর টিটু বলেন, শত বছর পূর্বে উপজেলার টাংগাব ইউনিয়নে ঈশা-খাঁ ও মানসিংহের মধ্যে যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। যুদ্ধে ঈশা-খাঁ জয় লাভ করে। মানসিংহের কিছু লোক জন এখানে থেকে যায়। তাদেরই বংশধর একটি বাড়ির গ্রাম শরীফগঞ্জ। এই বাড়ির সবাই উচ্চ শিক্ষিত।