বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫

অনিয়মের ত্রাস আবুল মনসুর

মামুন মিয়া নকলা (শেরপুর)

প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:১২ পিএম

অনিয়মের ত্রাস আবুল মনসুর

 



 প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে শুরু করে নদী দখল সহ নানা অভিযোগ শেরপুরের নকলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল মনসুরের বিরুদ্ধে। আবুল মনসুরের পছন্দের মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছেন সরকারি ঘর বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত মুক্তিযুদ্বাদের অনেকেই। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে থাকলেও আঃলীগের পদ প্রভাবশালী হওয়ায় মনসুরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেননি কেউ। স্বার্থে আঘাত লাগায় ইউএনওর যোগ-সাজুসে সাংবাদিককেও জেলে পাঠাতে মরিয়া ছিল আবুল মনসুর। অনিয়ম দুর্নীতির প্রশ্ন উঠায় গেল মার্চে সাবেক ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের সহযোগীতায় দৈনিক দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক রানাকে জেলে পাঠানোয় অতি উৎসাহী প্রধান সাক্ষী ছিল আবুল মনসুর। দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধ না করেই প্রভাব খাটিয়ে আ: লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘদিন দায়িত্বে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের। সুবর্ণখালী নদীর পাড় খননের অযুহাত দিয়ে জৈনক তমির উদ্দিন শেখের জামির উপর দিয়ে নদী খননের মাধ্যমে নদীর খাস জমি দখল করে ভবন এবং স্থাপনা তৈরির অভিযোগ মনসুরের বিরুদ্ধে তমির শেখের পারিবার সহ অনেকেরই। নদী খননের নামে নদীর নকশা পরিবর্তন করে ভূমিদস্যু কায়দায় তমির শেখের নিজ নামীয় জমির উপর দিয়ে নদী খনন করে নদীর খাস জমির একমাত্র সড়কের পাশে মাটি ভরাট করে বহুতল ভবন সহ গোডাউন মার্কেট তৈরিরও অভিযোগ শেখ পরিবারের।
২০১৭ সালে উপজেলা ভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির অন্যাতম প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আবুল মনসুর। যাচাই-বাছাই কমিটির প্রভাবশালী সদস্য উপজেলা কমান্ডার আবুল মনসুর প্রকৃত বঞ্চিত দাবিদার মুক্তিযোদ্ধাদের যারা সনাক্তকারী স্বাক্ষী ছিলেন তাদের মাসিক ভাতা বন্ধসহ মামলা মোকাদ্দমার হুমকি দিয়ে সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করেন ।
এমনই একজন দাবিদার মুক্তিযোদ্ধা ডা: হেফজুল বারী খানের অভিযোগ, তার সাক্ষী প্রশিক্ষক কমান্ডার খন্দকার মোশারফ হোসেন সাক্ষ্য দিতে আসলে মনসুরের হুমকি শুনে সাক্ষ্য না দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন। ডা: হেফজুল বারী খান প্রয়োজনীয় সকল প্রমাণপত্র সমূহ জমা দিয়ে সাক্ষাৎকারে অংশ নিলেও যাচাই-বাছাই ফলাফল শীটে দাখিলকৃত প্রমানক ঘরটি শূন্য দেখিয়ে ইউএনওকে দিয়ে ফলাফলশীট তৈরি করে মন্ত্রনালয়ে পাঠায় মনসুর।
সাবেক কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর একান্ত নিকটতম ব্যাক্তি পরিচয়ে আবুল মনসুর চলতেন বেশ দাপটেই। ডাঃ হেফজুল বারী খান বলেন, আমি তাদের আর্থিক সন্তুষ্টি করতে পারি নাই তাই আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মনসুর হয়তো এমনটা ভাবতো দেশে আর কোনদিন আইনের শাসন ফিরবে না। নকলা উপজেলায় বঞ্চিত দাবিদার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ডা. হেফজুল বারী খান, গৌড়দ্বার ইউনিয়নের ডা. সিরাজুল ইসলাম, ছাতুগাওয়ের হাতেম আলী, কুর্শাবাদাগৈর এলাকার আঃ মন্নাফ খান, চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা গ্রামের নুরুজ্জামান মাষ্টার, সিরাজুল ইসলাম, তারা মিয়া, তাফাজ্জল ইসলাম ও ফজলুল হকসহ হাইকোর্টে রিট করেছেন চৌদ্দজন। সকলের অভিযোগ আবুল মনসুর কমান্ডারকে মোটা অংকের টাকা না দেওয়ায় হাইকোর্টের রিটের সকল কাগজপত্র এবং দাখিলকৃত প্রমাণাদি গায়েবের মাধ্যমে যাচাই বাছাই কমিটিতে সহযোদ্ধাদের স্বাক্ষ্য না নিয়ে কলংকিত করেছেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের। 
স্থানীয় আবুল হোসেন, হুমায়ুন, আইয়ুব খান,নজরুল ইসলাম মুঞ্জু বলেন, নানা ভাউ তো বাজি দেখিয়ে আমাদের কাগজের জমির উপর দিয়ে খাল খনন করিয়ে প্রকৃত সুবর্ণ খালী নদীর ঘাটে মাটি ভরাট করে হাক্কু মিয়ার পুত্র আবুল মনসুরগং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে খাসজমি দখল করে মনসুরগং মিল ফ্যাক্টরি সহ গড়ে তুলেছে নানা স্থাপনা। অর্পিত খাস জমির ভূয়া দাবিদার দেখিয়ে নিজ নামে খারিজ করে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নকলা।