বুধবার, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪

❝ক্রেতা না আসার❞ অজুহাতে নির্ধারিত স্থানে বসছেন না হকাররা, 

সিলেট শহরের ফুটপাত ফের হকারদের দখলে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:১২ পিএম

❝ক্রেতা না আসার❞ অজুহাতে নির্ধারিত স্থানে বসছেন না হকাররা, 

 


সিলেট শহরের ফুটপাত গুলোতে ক্রেতা না আসার অভিযোগে নির্ধারিত স্থানে ব্যবসা গুটিয়ে ফের রাস্তার পাশের ফুটপাত গুলোতে ব্যবসা করছেন হকাররা। 
সিলেট নগরীতে দফায় দফায় অভিযান চালিয়েও ফুটপাত থেকে হকারদের সরাতে পারছে না সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এমনকি বিকেলের পর হকারেরা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে তীব্র যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর কিনব্রিজ, বন্দরবাজার, মহাজনপট্টি, জিন্দাবাজার, রিকাবিবাজার, আম্বরখানা, মদিনামার্কেট, মেডিকেল রোড, নবাব রোড পয়েন্ট, টিলাগড়, শিবগঞ্জ ও উপশহর এলাকার ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে হকারেরা ব্যবসা করছেন। এসব স্থানে অনেকে ভ্যানে করে সবজি, কাপড়চোপড়, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ফল, প্রসাধনসামগ্রীসহ বিভিন্ন স্টেশনারি পণ্য বিক্রি করছেন। 
নগরীর একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় মানুষজন ফুটপাত ধরে হাঁটতে পারছেন না। এতে অনেকেই মূল সড়ক ধরে হাঁটেন। আবার বিভিন্ন স্থানে সড়কের একাংশ হকারেরা দখল করে ফেলায় সেসব সড়কে নিয়মিত যানজট দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে ফুটপাতগুলো বেদখল হয়ে পড়ে।
রিকাবিবাজার এলাকায় কথা হয় পথচারী সাদিক আহমদ (২৫) সঙ্গে। তিনি জানান, সন্ধ্যার পরপরই রিকাবিবাজার এলাকায় ফুটপাত ও আশেপাশের রাস্তায় চা, ফাস্টফুড ও ঝালমুড়িসহ বিভিন্ন রকম খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসে। নগরীর ভোজনরসিক ও আড্ডাবাজ মানুষেরা এখানে ভিড় জমান। এতে আশপাশ জুড়ে মোটরসাইকেল ও সাইকেলের ভিড় লেগে থাকে। মূল রাস্তার অনেকটা জায়গা দখল করে নেওয়ায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
জানা গেছে, আরিফুল হক চৌধুরী মেয়রের দায়িত্বে থাকাকালীন ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সবসময় তৎপর ছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ট্রাফিক বিভাগের সহযোগিতায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ১ হাজার ৭০ জন হকারকে নগরীর লালদিঘিপাড়ে পুনর্বাসন করেন। তবে সেখানে ক্রেতা যান না অভিযোগ তুলে পুনরায় হকারেরা ফুটপাত দখলে নিয়ে নিজেদের মতো করে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করেন।
এরপর সর্বশেষ মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েই হকারদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। হকারদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের লক্ষে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে লালদিঘিরপাড়ে চার একর জায়গা নিয়ে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। চলতি বছরের ১০ মার্চ এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২ হাজার হকার এসে এখানে তাদের ব্যবসা-বানিজ্য শুরু করেন। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই হকারেরা ফের ফুটপাত দখলে নেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, নগরীর বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা এলাকায় অন্তত ১০ কিলোমিটার ফুটপাত আছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশই ভাসমান ব্যাবসায়ী ও হকারদের দখলে। এ ছাড়া নগরীর অন্যান্য এলাকাতেও ফুটপাত বেদখল হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, হকারদের উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। এ ছাড়া হকারেরা যেন তাঁদের নির্ধারিত পুনর্বাসনকৃত স্থানে যান, সে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে।