নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ৫ আগস্টের পূর্বে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, এখনও সেই খুনিদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য এবং তাদের সকল প্রকার পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে আমরা জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা যতই সান্ত্বনা দিই, আর্থিক সহযোগিতা দিই, একজন সন্তানের অভাব, একজন জীবনসঙ্গীর অভাব, একজন ভাইয়ের অভাব- কোনোদিনও পূরণ করতে পারবো না।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রামে ছাত্র জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে নিহত চট্টগ্রামের ১০৫ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠানে এই কথাগুলো বলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
অনুষ্ঠানে আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করেন সারজিস আলম। এসময় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে থেকে প্রতিটি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এ সময় সারজিস আলম বলেন, শেখ হাসিনা ও তাদের দোসররা নতুন রূপে ফিরে আসতে চাইছে। ষড়যন্ত্র করছে নানামুখি। তাদের প্রতিহত করতে প্রয়োজনে ছাত্র-জনতা আবারও সড়কে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনে নৃশংসতার বর্ণনা দিয়ে সারজিস বলেন, এখনও যারা এই আন্দোলন নিয়ে সাফাই গাইছে, তারা শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কীট। যা সে এতো বছর লালন করেছে। এসব কীটদের যদি পাখা গজায় তাহলে আজ থেকে ৫ বছর পর তারা শহীদ পরিবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তাই খুনিরা যেন কোনোভাবেই পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সে জন্য সচেতন থাকতে হবে। প্রয়োজনে আবারও জীবন বাজি রাখতে আমরা প্রস্তুত।
সারজিস আলম বলেন, নতুন করে এই বাংলাদেশে ওই পোশাক পরে কিছু পুলিশ সদস্য আবার একটি দলের হয়ে কাজ করছে। দয়া করে ওই পোশাকটা খুলে রেখে চলে যান। আমরা জীবন দিতে শিখে গেছি, এই দেশে কোনো দালাল ও তোষামোদকারীর আর জায়গা হবে না। শহীদ ভাইদের নিয়ে এখনো মামলা ব্যবসা হচ্ছে। আমরা এগুলো দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, পুলিশের গুলির সামনে জুলাই-অগাস্টে আমাদের অনেকে বুক পেতেছিল। আপনাদের যা কিছু প্রয়োজন, সবকিছু দিয়ে আপনাদের পাশে থাকব। কেউ যদি খুনি হাসিনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, আমরা একসাথে নেমে আবার তাদের প্রতিহত করবো।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, রাসেল আহমেদ, খান তালাত মাহমুদ রাফি ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সদস্য তাসনিম জারা।
উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি সঞ্জয় সরকার ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।