বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে এখন বোরো ধানের বীজতলায় ব্যস্ত কৃষক। আমনের মৌসুম শেষ হতে না হতেই বোরোধান চাষাবাদের জন্য কৃষকের ব্যস্ততা উপজেলা জুড়েই। চলতি বোরো মৌসুমে ধান আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে আগাম বিনামূল্যে সার ও বীজ সুবিধা পেয়ে কৃষকরা কোমর বেঁধেই মাঠে নেমেছে। চাষাবাদের শুরুতেই প্রণোদনা পাওয়ায় বোরো চাষে কৃষকের আগ্রহও বেড়েছে। উৎফুল্ল কৃষক শীতকে তুচ্ছ করে ঘাম ঝরাচ্ছেন মাঠে। কুয়াশায় ঘেরা কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি মাঠেই পরিশ্রম করছেন তারা। কেউ  হালচাষে ব্যস্ত, কেউ-বা বীজতলায় পানি দেওয়ায়।আমন ধানের ভালো উৎপাদন ও দাম  উৎসাহ- উদ্দীপনা বাড়িয়েছে তাদের অনেকটাই।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র নিশ্চিত করেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৪’শ জন চাষীকে বোরো ধানের হাইব্রিড বীজ দেয়া হয়েছে। 
কৃষি বিভাগের সরবরাহকৃত এসব বীজ থেকে চাষিরা বীজতলা তৈরি করেছে। অঙ্কুরোদগমন ভালো হওয়ায়ও খুশি চাষিরা। এ বছর মাঠ পর্যায়ে হীরা-২, ব্যাবিলিয়ন-২, এসএলএইটএইচ, ইস্পাহানি, পাটটেক্স-৩, সিনজেন্টা ১২০৫, ময়না, আফতাব, হীরা-২, সাথী, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯৯, ব্রি-১০০, ব্রি-১০২, ব্রি-১০৪ সহ নানা জাতের ধান চাষ করছেন কৃষকরা। ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এ বছর ৮হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এ লক্ষ্যে ৪১০ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তত করেছে চাষিরা। বিভিন্ন ব্লকে দেখা গেছে বোরো বীজতলার ব্যস্ততা।নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মৌভোগ ব্লকের কৃষক মো. জাকির হোসেন জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করছেন। ইতিমধ্যে তার বীজতলায় চারা বড় হয়ে গেছে। বীজতলা খুব ভাল হয়েছে। ১০/১২ দিনের মধ্যে তিনি বোরা ধানের চারা রোপন করতে পারবেন।কৃষক আফতাব উদ্দিন মোড়ল, ওলিউর রহমান, ইয়ার আলীসহ অনেক কৃষক জানান, আগাম বীজ পেয়ে তারা খুব খুশি। বীজতলার চারা তাদেরও খুব ভাল হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছরও বোরো ধানের বাম্পান ফলন হবে বলে মনে করেন তারা।
উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, এবার বীজতলা অনেক ভাল হয়েছে। কোন সমস্যা না হলে বোরোর আবাদ ভালো হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে উপজেলার ৫হাজার ৪’শ কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। নভেম্বরের শুরুতে কৃষকদের এই কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়। বোরো ধানের বীজ সময় মত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করার  ফলে আগাম বীজতলা তৈরি, রোপন ও ফসল ঘরে তুলতে পারবে চাষীরা। আবাদ আগাম করতে পারলে কোল্ড এ্যাটাক সহ নানান শীতজনিত রোগবালাই থেকে কৃষকের বোরো আবাদ মুক্ত থাকে। আমরা বোরো আবাদে সকল সেবা-সহযোগিতা নিয়ে মাঠে আছি কৃষকের পাশে।