নজরকাড়া সব মাটির জিনিস। ফুলদানি, ব্যাংক, জগ, গ্লাস, প্লেট, হাঁড়ি-পাতিল কী নেই! নানা বয়সী মানুষের ভিড় মৃৎশিল্প সামগ্রীর স্টলে।দরকষাকষি যেমন বিক্রিও হচ্ছে তেমনি। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিজয় মেলার চিত্র এটি। তিন দিনের মেলার প্রথম দিন সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বেচাকেনায় জমে উঠে পণ্যের পসরায় সাজানো স্টলগুলোতে।
কথা হয় ‘ মৃৎশিল্প’দোকানের মালিক অজয় করের সঙ্গে।
তিনি বলেন, অল্প সময়ের মেলা, মাত্র তিন দিন। তাই ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
অনেকে ভিড় এড়ানোর জন্য সুবিধাজনক সময়ে কেনাকাটা সারতে আসছেন সপরিবারে। আশাকরি, ভালো বিক্রি হবে।
গৃহিণী রোকসানা খাতুন পছন্দ করেন মাটির তৈরি দৃষ্টিনন্দন টব। দরদাম করে ৫০০ টাকায় কিনে নেন একটি। তিনি জানান, পশুপাখি,শাড়ি কাপড়ের দোকান শীতের পোশাকের দোকান মেলা আর বিজয় মেলা আমাদের ঐতিহ্য।সারা দেশের কুটির শিল্প, গৃহস্থালি সামগ্রী ওই মেলায় পাওয়া যায়। বিজয় মেলা হতো বিজয় দিবসকে ঘিরে আউটার স্টেডিয়ামে। এবারও প্রথমে আউটার স্টেডিয়াম, হবে শুনেছিলাম। অবশেষে যেখানে মেলার সূচনা হয়েছিল সেখানে ফিরে এলো।
শতাধিক স্টল তৈরি হয়েছে বিজয় মেলায়। বেশিরভাগ স্টলে পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেক তরুণ শখের বশে দোকান দিয়েছেন মেলায়। সবার আশা ভালো বিক্রি হবে।
প্রথম দিন সন্ধ্যাতেই জমজমাট ছিল কুটির শিল্পের তৈরি কুলা চালৈন এবং খারৈ সহ ফুড ভ্যালির স্টলটি। যদিও আবার বেশ কিছু ভালো রেস্টুরেন্ট এবং স্ট্রিট ফুড থাকায় মেলায় আসা দর্শক ক্রেতাদের খাবারের দাম, মান নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না।
মেলায় মেয়েদের বাহারি ওড়না বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, প্লাস্টিকের খেলনা প্রতিটি ১২০ টাকা ও হাত ব্যাগ ২৫০ টাকা।
নাজিরপুরে মেলা হবে আর রুহানি আচার থাকবে না তা তো হয় না সাথে মসলা মিশানো পানের দোকান। হ্যাঁ মেলার পূর্বপ্রান্তে দেখা গেল সেই আচারের স্টলটি। টক ঝাল মিষ্টি স্বাদের আচারপ্রেমীরা ঢু মারছেন সেই স্টলে। মুড়ি, মুড়কি, তিলের খাজা, গজা, বাতাসা, চনাচুর, বাদামভাজা, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি মুখরোচক খাবারের স্টলও আছে বেশ।
দক্ষিণ প্রান্তে দেখা গেল পিঠা পায়েসের দোকান। পিঠে খাওয়ার হিরিক পরেছে যেমনি তেমনি ভাবে হাঁড়ি, পাতিলে বিখ্যাত পায়েস কিনতে ভিড় করছেন ভোজনরসিকরা।
সরকার এ মেলা আয়োজনে অনেক সহযোগিতা করেছে। এটা সবার মেলা, জনগণের মেলা। বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তর, নব্বই, চব্বিশে কী হয়েছিল সেই বিষয়গুলো প্রজন্মকে জানানোর জন্য এ মেলার আয়োজন। এখানে অনেক স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে।