সকালের হালকা কুয়াশা শিশির ভেজা সকালে ঘাসের ডগায় বিন্দু বিন্দু জমে থাকা জল কণা জানিয়ে দিচ্ছে শীত এসে গেছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় শীতের আগমনে চলছে খেজুর রস সংগ্রহের মহা উৎসব।
শীতের এই আগমনী বার্তায় খেজুরের রস আহরণে গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহের ভালুকার গাছিরা।
সরজমিনে দেখা যায় ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য খেজুর গাছ।
খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের জন্য প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ভালোভাবে পরিস্কার করে বিশেষ কৌশলে কেটে সাদা অংশ বের করতে হবে এর পর রোদে শুকিয়ে পরপর আরো কয়েক দিন সাদা অংশটি কেটে পরিস্কার করে বিশেষ এক ধরনে নলি বা নল লাগিয়ে দিতে হবে। পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলে ছোট বড় হাঁড়ি বেঁধে কাঁকডাকা ভোর থেকেই রস সংগ্রহ করা হয়।
মৌসুমে এক একটি খেজুর গাছ ৩০-৪০ কেজি বা আরও বেশী রস পাওয়া যায়। কাঁচা রস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়ে থাকে।
খেজুরের রস দিয়ে ফিরনি, পায়েস এবং খেজুরের রস থেকে উৎপন্ন গুড় দিয়ে ভাঁপা পিঠা এবং গাঢ় রস দিয়ে তৈরি করা হয় চিড়া ও মুড়ির মোয়া, রসের চিতই পিঠা, হাতে কাটা চুই পিঠাসহ সহ হরেক রকম পিঠাপুলি।
খেজুরের রস পান করলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়।
এতে উচ্চ প্রাকৃতিক চিনি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে খেজুরের রস পান করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হয়।
উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের পাড়াগাঁও গ্রামের গাছি আবুল কাশেম(দেওয়ানী) বলেন, খেজুরের রস আহরণের জন্য একটা গাছে প্রস্তত করতে ৬ থেকে ৭ দিন লেগে যায়।গাছের ময়লা অপ্রয়োজনীয় ডাল পালা কেটে পরিস্কার করে তারপর গাছের সাদা অংশ বের করে তারপর নল লাগিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়।
আমি প্রায়২০ বছর যাবত খেজুর গাছ কাটি ও রস সংগ্রহ করি ।
উপজেলার মল্লিক বাড়ী এলাকার গাছি
আবুল কালাম বলেন ছোট থেকে বাবা দাদার কাছ থেকে দেখেই আমি ও শীতের সময় খেজুর গাছ কাটি এবং রস সংগ্রহ করি।
কাঁচা রস জ্বাল দিয়ে খেজুর গুড় তৈরী করি।
এসময়টাই কাঁচা রস, জ্বাল দেওয়া রস, খেজুরের গুড় বিক্রি করে সংসার চলে আমার ।
বর্তমানে এই উপজেলায় খেজুর গাছ দিন দিন কমছে। ইটভাটার জ্বালানি জন্য খেজুর গাছের চাহিদা প্রচুর আর অন্য গাছগুলোর কাঠের দাম বেশী ও লাভজনক হওয়ায় খেজুর গাছ কেটে অন্য গাছ রোপন করছে জমির মালিকেরা।