নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় নিন্মমানের বালু দিয়ে রাস্তা নির্মানের অভিযোগ রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন এলাকাবাসী৷ উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি মেহের পাড়া থেকে রব্বানী মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের জন্য মেসার্স শফিকুল আলম নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স থেকে মকছেদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি কাজটি করছেন।
অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের গাফিলতি, প্রকৌশলী অফিসের লোকদের নিয়মিত কাজের খোজ না নেওয়ার ফলে ব্যবহার অযোগ্য বালু দিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন সাব ঠিকাদার।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রভাতী প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪১ টাকায় ব্যয়ে টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেহেরপাড়া হইতে ২ ওয়ার্ডের গোলাম রব্বানী মেম্বার বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে।
সরেজমিনে চরখড়িবাড়ী গ্রামে দেখা যায় রাস্তার কাজে ব্যবহার করা বালুতে ভিটে মাটি রয়েছে। তাছাড়া রাস্তা কেটে সাইটে রাখা ভিটে মাটিও রাস্তায় ফেলে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। নদীর চর কেটে কাশবাগান ও ধান ক্ষেতের রাবিস বালু রাস্তায় দিয়েছেন। সাড়ে তিন কিলোমিটারের রাস্তার অনেক জায়গায় ধান গাছের মোথা (নাড়া), কাশবাগানের খড়ি ও খড়কুটু দেখতে পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় প্রতি কিউবিক ফুট বালুর জন্য ৯ টাকার (ভ্যাটসহ) বেশি বরাদ্ধ থাকলে বালু সরবরাহকারী ৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে বালু সরবরাহ করছে। এতো কমে দামে ভালো বালু দেওয়া সম্ভব নয় বলেই তারা নিম্নমানের বালু দিয়ে কাজ চালিয়ে দিচ্ছে।
চরখড়িবড়ী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, বালি না দিয়ে পাশে থেকে মাটি দিয়ে রাস্তার কাজ করতেছে। বালির পরিবর্তে মাটি দেওয়ার সময় এই এলাকার জনসাধারণ ও মহিলারা মিলে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন। এভাবে মাটি দিয়ে রাস্তা তৈরি করলে দুই বছরও টিকবে না। এলাকার জনগন প্রয়োজনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করবে। এই মাটি অপসারণ করে বালি দিতে হবে। আগের মাটিতে অনেক জঙ্গল ছিলো আমরা এই বিষয়ে তাদেরকে বললে তারা আমাদের জঙ্গল পরিষ্কার করার আশ্বাস দিয়েও করেনি। তারা সেই অপরিষ্কার বালুর উপর দিয়ে আবার ভিটে মাটি দিয়ে দেন। এই কাজের সাথে কে যুক্ত আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আকিক, আলম, মাসুম এবং উর্ধতন কর্মকর্তারা।
একই গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, এই রাস্তাটি সম্পূর্ণ বালু দিয়ে তৈরি করার কথা থাকলে বালুর পরিবর্তে পাশের ভালো মাটিগুলো রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মাটি দিয়ে রাস্তা তৈরি করলে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা শ্রমিকদের বলে রাস্তার কাজ বন্ধ করিয়ে দেই। ভালো বালু দিয়ে রাস্তা করার জন্য ঠিকাদারকে বলি।
এজ বিষয়ে অভিযুক্ত আকিকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, লেবেলের কাজের ব্যবহৃত বালু রাস্তায় দিয়েছে। এটার কোনো নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে নিজের অভিযোগ এড়িয়ে তিনি বলেন, এটার কোনো নিয়ম নেই। ঠিকাদার এই কাজ করলে আমরা কাজটি বন্ধ করে দেই।
ঠিকাদারের কাছে থেকে কাজ নেওয়া মকছেদুল ইসলামের কাছে বালির পরিবর্তে মাটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন নিয়ম নাই। তবে অনেক সময় দেওয়া যায়। এখানে দুই এক কোদাল মাটি দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ রাস্তায় মাটি দেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
রাস্তা পরিদর্শন করে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, এইখানে স্থানীয় জনগণের অভিযোগ পেয়ে আমরা দেখতে আসছি। এইখানে ০ দশমিক ৫ বালি দেওয়ার কথা। দুই এক জায়গায় যদি প্রয়োজন পরে তবে পাশে থেকে বালি নিয়ে দেওয়া যায়। আমরা নিয়মিত খোজ রাখবো কাজের বিষয়ে ঠিকাদার ম্যানুয়াল মেনে কাজ না করলে বিল আটকিয়ে দেওয়া হবে।