বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৫

মিরসরাইয়ে রাতের আধাঁরে সীমান্ত দিয়ে অবাধে ডুকছে ভারতীয় গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম

মিরসরাইয়ে রাতের আধাঁরে সীমান্ত দিয়ে অবাধে ডুকছে ভারতীয় গরু

চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের বাংলাদেশ ভারতী সীমান্তের দুটি পয়েন্ট দিয়ে অবাধে ডুকছে ভারতীয় গরু। অলিনগর এলাকার আমতলী ও বদ্ধ ভবানীর হরিঙ্গা টিলা দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া টপকিয়ে হরহামেশায় ঢুকছে অবৈধ ভারতীয় গরু। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,শনিবার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের নলখো এলাকায় পিকআপে করে গরু ভর্তি করতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টার পেয়ে যে যার মত করে পুনরায় গরু নামিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করে। 
জানা গেছে, অলিনগরের বড় জাহাঙ্গীর ও ছোট জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। ছোট জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গেলে দেখা যায় ৫০ লাখ টাকা দিয়ে একতলা বাড়ি করেছে অথচ পেশায় তিনি কৃষক। অন্যদিকে ৫আগষ্টের পরে এই দুজনের সাথে একই গ্রামের আরো বেশ কয়েকজন যুক্ত হয়েছে। এছাড়া বদ্ধ ভবানী দিয়ে ৪/৫ জন গরুর অবৈধ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অলিনগরের বড় জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা শুধু মাত্র গরু কেরিং করি। অলিনগর থেকে চিকনছড়া পর্যন্ত পৌঁছে দিলে প্রতি গরুতে আমরা ২ হাজার টাকা করে পাই। তারমধ্যে বিজিবি, পুলিশ, গাড়ি ভাড়া দেয়ার পর হাতে আর থাকে না। তারমধ্যে এখন বিএনপির নেতাদেরও টাকা দিতে হয়। 
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা বাজার রবিবার এবং ফটিকছড়ি ইউনিয়নের চিকন ছড়া বাজারে মঙ্গলবার গরু হাট বসে। ওই দুইদিন বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ গরুর সমাগম ঘটে। এবং হাসিল কেটে অবৈধ গরুকে বৈধতা দেয় বাজার ইজারাদার। 
সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে রাতের আঁধারে অবাধে ডুকছে ভারতীয় গরু। এতে করে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 
মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মিরসরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ১১শত টি গরু খামার রয়েছে। ১১শত গরু খামারে পশু রয়েছে ৯৫ হাজার ৯০০টি। খামারিরা দিন দিন খামার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অবাধে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই দেশের খামারিরা তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। 
এনিয়ে কয়লা বাজার ইজারাদার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভারতীয় গরু বাজারে আসে এটা শুনেছি। তবে আমরা কোথায় থেকে আসে না আসে সেটা দেখার বিষয় না। প্রতি বাজারে ৪০০-৫০০ গরু উঠে। প্রতি গরু হাসিল ৫০০ টাকা করে কাটা হয়।


এদিকে করেরহাট অলিনগর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার শওকত হোসেন জানান, ভারতীয় গরু আসছে এরকম কোন তথ্য আমাদের কাছে নাই। তবে যদি আসে তাহলে আপনারা সহযোগীতা করুন আমরা তা প্রতিহত করবো। 
ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) এর ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খাঁন বলেন, ভারতীয় গরু বাংলাদেশে ঢুকছে এরকম সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই অভিযান চালাবো। তবে অধিকাংশ সময় চোরাকারবারিরা ভুয়া তথ্য দিয়ে আমাদের বিচলিত করে ‌। আমরা সর্বদা সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর মতো আছি।