বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৫

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় রমরমা দেহ-ব্যাবসা

সামির হোসেন মোহন, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় রমরমা দেহ-ব্যাবসা

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে পাহাড়ের বুকে অবস্থিত মুগ্ধ করার মতো অপরূপ সৌন্দর্য বিস্তৃত ফয়েস লেক এলাকা। পর্যটনের জন্য এখানে রয়েছে চিড়িয়াখানা ও সিওর্য়াল্ড। তবে এই এলাকা পর্যটনের শীর্ষে হলেও এখানে শেষ নেই বিভিন্ন অনৈতিক কাজের। চাঁদাবাজি, দখল-বাণিজ্য, মাদক, দেহ-ব্যবসা কি নেই এই এলাকায়। এ যেন অপরাধের এক অনন্য স্বর্গরাজ্য।
নগরীর ফয়েস লেক পর্যটকদের জন্য যেমন আকর্ষণীয় স্থান তেমনি পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষদের কাছে মাদক, দেহ ব্যাবসার একটি বিশেষ স্থান হিসেবে চিহ্নিত। অবৈধ এমন কিছু নেই যেটা এখানে পাওয়া যায় না। মদ, গাজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সেই সঙ্গে যৌবনের চাহিদা মেটাতেও ফয়েস লেক এলাকার হোটেল-মোটেলগুলোতে প্রস্তুত রয়েছে হাজারো রমনী।
ফয়েস-লেক এলাকায় প্রবেশ করতে হাতের ডান দিকে একসঙ্গে একের পর এক ডুপ্লেক্স বাড়ি চোখে পড়ে আর ঐ বাড়ি গুলোতে চলে অবৈধ দেহ ব্যাবসা যা শুরু হয় ১ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা। এখানে নারীর সঙ্গে মাদক সেবনেরও রয়েছে বেশ সুবিধা।
ফুটপাত থেকে শুরু করে পুরো ফয়েজ লেক এলাকাটির সৌন্দর্য দখল করে আছেন কিছু অসাধু ব্যক্তিগণ। শুধু তাই নয় পর্যটকরা এখানে এসে অনেক সময় হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। ১০ টাকার পন্য কিনলে ডাবল টাকা দিতে হয় এটা নিয়ে তর্কবিতর্ক করলে মূল্যের পরিমাণ আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে হুমকি দিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা।
এলাকার সচেতন মহলের মানুষের অভিযোগে বিভিন্ন  সময়ে অভিযান চালিয়ে একাধিক নারী ও পুরুষকে গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে পুনরায় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তারা আবারও এই অপকর্মের সাথে লিপ্ত হয়ে পড়েন বলে জানা যায়।
নাম না বলা শর্তে ফয়েস লেক এলাকায় বসবাসরত এক ব্যাক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় প্রায় হোটেলগুলোতে দেহÑব্যাবসা চলছে। দেহ-ব্যাবসার স্পটগুলো এক সময় আওয়ামী নেতা-কর্মীরদের নেতৃত্বে চলতো তবে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর কিছু বে-নামী বিএনপি নেতা-কর্মীরা স্পটগুলো দখল করে পুনরায় আবারো চালিয়ে যাচ্ছে এমন অনৈতিক কর্মকান্ড। প্রশাসনের লোক সর্বদা এসব এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও দেখা যায়নি কোন পদক্ষেপ নিতে।  মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান দিয়েই দায় সারছে প্রশাসন।
ফয়েজ লেক বৃহত্তর মালিক কল্যাণ সমিতির সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরি মাসুম আজকের বাংলা পত্রিকা কে জানান, ফয়েজ লেক এটি একটি পর্যটনকেন্দ্র। শহরের ভিবিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ করতে আসেন অনেক মানুষ। এখানে চলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড এই কর্মকাণ্ড গুলো করে বেড়াচ্ছেন নামধারী কিছু অসাধু ব্যক্তি। তারা পূর্বে করে আসছেন এখনো করছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় চলে আসছেন অবৈধ কর্মকাণ্ড।
এ বিষয়ে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, ফয়েজ লেক এলাকায় আমরা ভিবিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে থাকি। একাধিক বার ঐ এলাকা থেকে অসংখ্য অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের আটক করেছি। আইনের নির্ধারিত মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পূর্ণরূপে লিপ্ত হন তারা। অসাধু ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আবার সেই অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। আমাদের একার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে হয়তো সম্ভব এগুলো বন্ধ করা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টা কোনো দিকে থেমে নেই।