আসিফুজ্জামান সারাফাত, চট্টগ্রাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,
মালিকানা নিয়ে টানাটানি করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে। আন্দোলনের মালিকানা মানে জনগণ তাদের ভোটে যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করবে। এটা নিয়ে কেউ খেলাধুলা করলে আবার শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে। আপনারা ভোট না নিয়ে নতুন নতুন বয়ান সৃষ্টি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা— এখানে কাজ করবে না। ভোটে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানের পাশে ওই সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
খসরু বলেন, ‘আন্দোলনে যাবেন, নতুন নতুন বয়ান শোনা যাচ্ছে। আন্দোলন হাইজেক করে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। বয়ান দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করে দেখবেন। আমরা এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘বিএনপি একা এই আন্দোলন করেনি। সমস্ত মানুষ মিলে আমরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে। আন্দোলন এবং আন্দোলনের মালিকানা কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মালিকানার হিসাব যদি করতে হয়, আমরা (বিএনপি) যেই হিসাব দিব আপনারা লজ্জা পাবেন।’
ছাত্রদল দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতনের পরেও রাজপথে ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদল রাস্তায় থেকে জীবন দিয়ে পঙ্গু হয়ে, মামলা খেয়ে, পালিয়ে বেরিয়ে, ব্যবসা-চাকরি হারিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে। এই ছাত্রদল, যারা এরশাদকে বিতাড়িত করেছে; দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গুম, খুনের শিকার হয়েও কেউ বাড়ি ফিরে যায়নি।’
‘আমরা চাই না আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটি বিভক্ত সৃষ্টি হোক। আমরা চাই আন্দোলনকে নিয়ে দেশে ঐক্য সৃষ্টি হোক। আর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে চিরজীবনের জন্য দেশ থেকে যে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে সেই ফ্যাসিস্ট ও তার প্রেতাত্মা যাতে আর ফিরে আসতে না পারে।’— বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে— শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। এর বাইরে আর কোনো দায়িত্ব নেই। আর যে সংস্কারের গল্প করা হচ্ছে সেগুলো হবে আগামী সংসদে। অর্থাৎ নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যত সংস্কার প্রয়োজন তা করবে।’
সমাবশে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে; তখন ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আর তখনই ছাত্রদলসহ সকল দলই সরকার পতনে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি, ছাত্রদল, ছাত্র এবং ১৮ কোটি মানুষের নেতৃত্ব ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের সকল দেশপ্রেমিক ছাত্ররা আন্দোলন শেষ করে বাসা-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত গিয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও তাই করেছে। কিন্তু যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কথা বলে কোটায় গিয়ে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, এসময় এটা হবে না। দেশের মানুষের পত্যক্ষ ভোটে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।’